
আঁখি চক্রবর্তীঃ সেদিন যখন ঘুম থেকে উঠেছি, ভোরের আলো ফোটেনি তখনও। স্নান সেরে রওনা দিলাম বিশ্বনাথ মন্দিরের দিকে, পুজো দেবার উদ্দেশ্যে। কুম্ভের ভিড়ের জন্য সুগম দর্শনের ব্যবস্থা বন্ধ ছিল। সাধারণ লাইনে দাঁড়িয়েই পুজো দেবার ব্যবস্থা। তবে ভোর ভোর গেছিলাম বলে মানুষ জনের ভিড় যথেষ্ট কম ছিল। মন্দিরের বাইরের একটি দোকান থেকে ডালা কিনে পথ চলা শুরু করলাম তাঁর উদ্দেশ্যে। এখানে একটা কথা বেশ প্রচলিত, ‘বনারস্ কী হর কঙ্কর মে শঙ্কর হ্যা’, এখানে এলে সে কথা আপনি মানতে বাধ্য। এ পুরো নগরীর কোণায় কোণায় তাঁর আবেশ ছড়িয়ে আছে। এখানের জল, স্থল, বাতাস, আকাশ সকলই শঙ্করময়।মন্দিরের চারপাশে সে উপস্থিতি আরও প্রবলভাবে অনুভূত হয়। মনে হয় তিনি আপনার পুজো পাওয়ার প্রতীক্ষায় রত, আপনার প্রতিপদক্ষেপে এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে অলক্ষ্যে তাঁর মুখের হাসি যেন আরো মনোহরা হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুনঃ https://sonarpurupdate.com/benares-travel-experience/
মন্দিরের চারটি দরজা দিয়েই পুজো দেওয়া যায়। এক পা এক পা করে যখন মন্দিরের খুব কাছে পৌঁছোলাম দেখি ধীরে ধীরে আঁধার কেটে আলোর রেখা জাগছে আকাশের বুকে, আর অবিরাম কী এক মলয়া বাতাস বইছে গঙ্গাবক্ষ থেকে উঠে এসে। তাঁর কাছে যাবার প্রতীক্ষার সাথে, মন্দিরের আবহ, ভোরের আলো, মৃদু বাতাস মিলে কেমন যেন ঐশ্বরিক করে তুলল সবটুকু। সেদিন আবারও বুঝলাম গন্তব্যের থেকে চলার পথ আরো আরো সুন্দর। একসময় এসে পড়লাম তাঁর দরজায়, চোখ ভরে দেখলাম তাঁকে, পুজো নিলেন তিনি, অনন্ত আশ্বাস দিলেন পরিবর্তে।