
বারুইপুর: কাশ্মীরি যুবকদের জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকার দাবি করে রাজ্য রাজনীতিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু সেই দাবি নস্যাৎ করে এবার কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিল বারুইপুর পুলিশ। পুলিশ সুপার পলাশ চন্দ্র ঢালি জানিয়েছেন, ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনার সূত্রপাত বিরোধী দলনেতার এক দাবি ঘিরে। তাঁর অভিযোগ ছিল, বারুইপুরের নিরঞ্জন অ্যাপার্টমেন্টে কাশ্মীরি দুই যুবক লুকিয়ে থেকে জঙ্গি কার্যকলাপ চালানোর পরিকল্পনা করছে এবং ছাদে বসানো হয়েছে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি অ্যান্টেনা। অভিযোগের ভিত্তিতে বারুইপুর থানার পুলিশ দ্রুত তদন্তে নামে।
আরও পড়ুনঃ অনলাইন লোন অ্যাপের ফাঁদে তরুণী, অর্থ না দিলে ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের হুমকি
পুলিশ তদন্তে উঠে আসে, ওই দুই যুবক কাশ্মীরি নন, মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা। তারা এপ্রিল মাসের ৪ তারিখ থেকে নিরঞ্জন অ্যাপার্টমেন্টের একটি দুই রুমের ফ্ল্যাটে ভাড়া রয়েছেন। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে, তারা একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ও একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। দু’জনেই ভোপালের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে স্নাতক। পুলিশ সুপার জানান, ছাদে যে ‘অ্যান্টেনা’ বসানো হয়েছে, সেটি আদতে জিও ফাইবার সংযোগের জন্য। এছাড়া, তারা বিষ্ণুপুর এলাকায় একটি জমি কিনে মাছ চাষের ব্যবসা শুরু করার পরিকল্পনা করছেন। বারুইপুরে থাকলে সেই কাজ পরিচালনা করতে সুবিধা হবে বলেই তাঁরা এখানে থাকছেন বলে জানান তারা। তাদের আধার কার্ড সহ যাবতীয় নথিপত্র যাচাই করেছে পুলিশ। কোনও রকম জঙ্গি কার্যকলাপ বা সন্দেহজনক প্রমাণ মেলেনি। ফলে পুলিশ নিশ্চিতভাবে জানিয়েছে, কাশ্মীরি পরিচয় এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ সংক্রান্ত দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।
পুলিশ সুপার পলাশ চন্দ্র ঢালি বলেন, “এই ধরনের ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য জনমনে আতঙ্ক ছড়ায়। যারা এ ধরনের গুজব ছড়াচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পাশাপাশি সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে তাঁর আবেদন, গুজবে কান দেবেন না এবং যাচাই না করে তথ্য শেয়ার করবেন না। এই ঘটনার পর রাজনৈতিক মহলে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে—সংবেদনশীল বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতাদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত কি না।