
মহামায়তলাঃ সাবেকি প্রথা আর বাঙালিয়ানার ছোঁয়ায় শুরু হয়েছে মহামায়াতলার তেঁতুলতলার ঘোষবাড়ির দুর্গাপুজো। কুমোরটুলির শিল্পীদের গড়া মাটির প্রতিমা আর এক দিনের আয়োজনে দ্বিতীয় বর্ষে পা দিল এই পুজো। এবছরও ধুমধাম করে আয়োজন হয়েছে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান আর সামাজিক উদ্যোগের। প্রসঙ্গত, মহামায়াতলার তেঁতুলতলায় অবস্থিত ঘোষবাড়ির ‘বসুমতীভবন’-এর এই দুর্গাপুজো শুরু করেন নিখিল ঘোষ। তাঁরই উদ্যোগে গত বছর প্রথমবার পুজো শুরু হয়। পরিবারের ঐতিহ্য মেনে এবারও ছেলে নিলয় ঘোষ পুজোয় বসেছেন। তাঁর সঙ্গে আরও দুজন পুরোহিতও মন্ত্রোচ্চারণ ও আচারানুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ কাশীর ডাকে বাঁধা পড়ে থাকা মন — ফিরে আসার পথেও যেন থেকে যাওয়া
এই পুজোর অন্যতম বিশেষত্ব হল নরনারায়ণ সেবা। প্রতিমা দর্শন, পুজো, অঞ্জলি এবং প্রসাদ বিতরণের পাশাপাশি আয়োজন করা হয়েছে দরিদ্র ও প্রবীণদের খাওয়ানোর। পাড়ার প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন সকলেই এই সেবামূলক কাজে এগিয়ে এসেছেন। পুজোর দিনে সকাল থেকেই শুরু হয় চণ্ডীপাঠ। সঙ্গে হয়েছে রুদ্র চণ্ডীপাঠও। ভক্তিমূলক পরিবেশে মুখরিত হয়েছে গোটা তেঁতুলতলা এলাকা। ছোট বড় সকলেই অংশ নিয়েছে পুজোর বিভিন্ন কাজে। পুজোর অন্যতম আকর্ষণ কুমারী পুজো। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ও শুদ্ধাচারে তার আয়োজন করা হয়। ছোট্ট কুমারীকে দেবীরূপে সাজিয়ে পুজো করা হয়। পরিবারের বড়রা তাকে আশীর্বাদ করেন। বসুমতীভবনের এই পুজো একদিনের হলেও আয়োজনে কোনও খামতি ছিল না। পূর্ণ প্রচেষ্টায় সবার মন জয় করেছে ঘোষ পরিবার। নিখিল ঘোষ জানালেন, “সকলের সহযোগিতা আর আশীর্বাদে পুজো শুরু করেছিলাম। এবার দ্বিতীয় বছর। ভেবেছিলাম ছোট করে করব, কিন্তু সবার ভালোবাসায় পুজো অনেক বড় হয়ে গেল।” নিলয় ঘোষ বললেন, “এই পুজো শুধু ঘোষ পরিবারের নয়, গোটা মহামায়াতলার। সকলের অংশগ্রহণ ছাড়া এটা সম্ভব হত না। আগামী দিনে পুজো আরও বড় করে করার ইচ্ছে আছে।”
পুজো উপলক্ষে অতিথিদের জন্য পরিবেশন করা হবে সুস্বাদু ভোগ ও প্রসাদ। একদিনের পুজো হলেও মহামায়াতলার তেঁতুলতলার ঘোষবাড়ির এই আয়োজন ইতিমধ্যেই এলাকাবাসীর কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সামাজিক সেবামূলক কাজের মাধ্যমে এক অনন্য নজির তৈরি করেছে এই পুজো।