
কুলতুলিঃ নববর্ষের দিনই শোকস্তব্ধ কুলতলি। তেঁতুলবেড়িয়ার গোচরণ টি এস সনাতন হাইস্কুলের এক শিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। মৃতের নাম প্রণব প্রতীপ নাইয়া (৪২)। পেশায় বাংলা ভাষার শিক্ষক ছিলেন তিনি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদেহটি তাঁর নিজের ঘর থেকেই উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যার সম্ভাবনা থাকলেও, ঘটনার পিছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে কুলতলি থানার পুলিশ। ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি সুইসাইড নোট ৷ পুরো বিষয় খতিয়ে দেখছে পুলিশ ৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রণববাবু ২০১২ সালে শিক্ষক পদে নিযুক্ত হন। সম্প্রতি ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি যাওয়ার সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। যদিও তাঁর চাকরি ছিল নিরাপদ, তবুও বিষয়টি নিয়ে তিনি ভীষণ চিন্তিত ছিলেন বলে জানান পরিবারের সদস্যরা। এ ছাড়াও, বাজারে কিছু দেনা ছিল তাঁর, যা আরও চাপ সৃষ্টি করেছিল বলে অনুমান।
আরও পড়ুনঃ জমি বিবাদে পুলিশের কাজে বাধা, নরেন্দ্রপুরে গ্রেফতার শ্যালক-জামাইবাবু — এলাকায় চাঞ্চল্য
পরিবারের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা সুভাস চন্দ্র নাইয়া, যিনি চাষবাস করেন, মা এবং কলেজে পড়ুয়া এক বোন। তাঁদের কথায়, প্রণববাবু বিগত কিছু মাস ধরে বেশ চুপচাপ থাকতেন। কারোর সঙ্গে খুব একটা মিশতেন না, মোবাইল ফোনেই ডুবে থাকতেন দিনের অধিকাংশ সময়। ২০২১ সালে মুর্শিদাবাদ থেকে বদলি হয়ে নিজের বাড়ির কাছাকাছি এই স্কুলে যোগ দেন তিনি। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, প্রণববাবু নিয়মিত স্কুলে যেতেন না। গেলেও খুব একটা ক্লাস নিতেন না এবং সহকর্মীদের সঙ্গে মেলামেশাও করতেন না। এই সমস্ত ঘটনার সমাহারেই কি এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি? উঠছে প্রশ্ন। নববর্ষের সকালে এই হৃদয়বিদারক ঘটনা আরও বেশি শোকের আবহ তৈরি করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এবং সহকর্মীরা হতবাক। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে কুলতলি থানার পুলিশ।
পুলিশ অস্বাভাবিক মৄত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ৷ এই ঘটনায় ইতিমধ্যে পরিবার ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে ৷ তার স্কুলের সাথেও যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে ৷ পাশাপাশি খতিয়ে দেখা হচ্ছে তার মোবাইল ফোনটিও ৷