
হরিনাভীঃ দেশ তখনও স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখছে। সেই সময়েই নারী শিক্ষার অগ্রগতির কথা ভেবে সোনারপুরের হরিনাভীতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল একটি স্বপ্নের বিদ্যালয় — সুভাষিণী বালিকা বিদ্যালয়। ছোট একটি ঘর থেকে শুরু হয়েছিল পথচলা। আজ, এক শতাব্দী পরে, তা যেন এক বিশাল মহীরুহে পরিণত হয়েছে। আজ এই বিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এই অঞ্চলের মানুষের কাছে গর্বের আর এক নাম। শতবর্ষ — এটি শুধুমাত্র একটি মাইলস্টোন নয়, বরং এক শতাব্দী জুড়ে শিক্ষার অগ্রগতির ধারাবাহিকতার এক উজ্জ্বল প্রমাণ। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা পামেলা সরকার জানিয়েছেন, শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি। ১৭ই জানুয়ারি এক উদ্দীপনাময় ম্যারাথন রেসের মাধ্যমে সূচনা হয়েছে শতবর্ষ উদযাপনের আনুষ্ঠানিক সূচি।
আরও পড়ুনঃ সোনারপুরে আধুনিক ফিটনেসের ঠিকানা ‘প্রোফিট জিম’, ফিটনেস চর্চায় মগ্ন যুবসমাজ
এই উপলক্ষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় এক আবেগঘন পুনর্মিলন অনুষ্ঠানের। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ছাত্রী ও শিক্ষিকারা, যারা আজ কেউ শিক্ষিকা, কেউ চিকিৎসক, কেউবা আবার আইনজীবী হয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠিত। অনেকেই হয়তো স্কুল ছাড়ার পর আর কখনও একে অপরের সাথে দেখা করেননি। কিন্তু আজ, জীবনের ব্যস্ততার মাঝেও সময় বের করে তাঁরা ফিরে এসেছেন সেই হারিয়ে যাওয়া ছোটবেলায়। ক্লাসরুমের বেঞ্চে বসে, স্মৃতির পাতায় হাত বুলিয়ে আবার একবার ছুঁয়ে দেখেছেন সেই সোনালি দিনগুলিকে। বিদ্যালয়ের অগ্রগতির আরেক নতুন সংযোজন হলো অত্যাধুনিক সেমিনার রুমের উদ্বোধন। এই নতুন ঘরটিতে ভবিষ্যতে নানা শিক্ষামূলক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
বর্তমানে বিদ্যালয়ে ষোলশ জন ছাত্রী অধ্যয়নরত। প্রধান শিক্ষিকা আশাবাদী, প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রছাত্রীদের নিবিড় মেলবন্ধনে সুভাষিণী বালিকা বিদ্যালয় আগামীদিনেও ছুঁবে আরও অনেক সাফল্যের মাইলস্টোন। শতবর্ষের এই গৌরবময় মুহূর্ত শুধু একটি উৎসব নয়, এটি ইতিহাস, এটি ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি — নারী শিক্ষার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।