
নিজস্ব প্রতিবেদনঃ সুমন দাস… জন্মসূত্রে এক পরিচয়, কিন্তু মন-প্রাণে ছিলেন সুমনা। ছোট থেকেই বুঝতে পারতেন, তিনি আলাদা। খেলাধুলার বদলে নাচে ছিল আগ্রহ, গলায় ছিল কোমল স্বর, আচরণেও ছিল মেয়েলি ছাপ। আর ঠিক এখান থেকেই শুরু হয় সমাজের রুদ্ধদৃষ্টি, ব্যঙ্গ, কটূক্তি আর অপমান। স্কুলে, রাস্তায়, এমনকি নিজের পাড়া বা পরিবারেও তিনি হয়ে ওঠেন বিদ্রুপের লক্ষ্য। নিজের পরিচয়, নিজের সত্তা—সবকিছু নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় দিনের পর দিন। চার বছরের জন্য বাড়ি ছেড়ে থাকতে হয় তাকে, শুধু নিজের স্বপ্নটাকে আঁকড়ে ধরার জন্য।
ভিডিও দেখতে ক্লিক করুনঃ https://www.youtube.com/watch?v=oSNe_X3KaNM
কিন্তু সুমনা হার মানেননি। নিজেকে চিনেছেন, বুঝেছেন, সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেণ্ডার পরিবর্তনের—একটা বড়, কঠিন, কিন্তু আত্মমর্যাদার জন্য অপরিহার্য পদক্ষেপ। সময়ের সঙ্গে পরিবারও বদলেছে। অবশেষে ফিরে আসেন নিজের আপনজনদের মাঝে।
আর ফিরে এসে নতুনভাবে শুরু করেন নিজের জীবন। আজ সুমনা একজন সফল মেকআপ আর্টিস্ট। নাচ এখনও ভালোবাসেন, রঙে-তুলিতে গড়ে তুলেছেন নিজের দুনিয়া।
তিনি এখন শুধু নিজের পরিচয়েই বাঁচতে চান—not as someone society tolerates, but as someone it respects.
তবে সংগ্রাম এখানেই শেষ নয়। আজও তাকে শুনতে হয় কটু কথা, সইতে হয় কটাক্ষ।
অপমানের সীমা পেরিয়ে একাধিকবার হেনস্থার শিকারও হতে হয়েছে। থানায় অভিযোগ জানাতে হয়েছে নিরাপত্তার জন্য। তবু সুমনা দমে যাননি। তিনি বিশ্বাস করেন—নিজের পরিচয়ে বাঁচাটা কোনো অপরাধ নয়, অধিকার। আমরাও তার পাশে আছি—এই লড়াইয়ে, এই স্বপ্নযাত্রায়। কারণ সুমনার গল্প শুধুই একজনের নয়, বরং হাজারো ‘অপর‘ হয়ে ওঠার সাহসিকতার প্রতীক।