
সোনারপুরঃ সোনারপুরে ঘটল এক মানবিক উদাহরণ। সময়োচিত তৎপরতায় সাত বছরের ছোট্ট মেয়ে আরাধ্যা কেওটকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিল সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালের কর্মী ও পুলিশ। ঘটনার সূত্রপাত পেটুয়ার মসজিদ মোড় এলাকায়। আরাধ্যা, পিতা অশোক কেওট ও মাতা আয়েশা কেওট-এর একমাত্র কন্যা। ঘটনার দিন বিকেল চারটে নাগাদ, পাড়ার টিউশান স্যারের কাছে পড়তে গিয়ে, মা-বাবার বকুনি খেয়ে আর বাড়ি ফেরেনি সে। এর পর থেকেই তার খোঁজ না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে, সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালের আশপাশে এক ছোট মেয়েকে সন্দেহজনকভাবে ঘুরতে দেখে, হাসপাতালের কিছু কর্মীর সন্দেহ হয়। মেয়েটির বয়স, মুখের ভাবভঙ্গি ও একা ঘোরাঘুরি দেখে তাঁরা তার খোঁজ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। মেয়েটির পিঠে একটি স্কুল ব্যাগ ছিল। ব্যাগ খুলে বইপত্র ঘেঁটে জানা যায় তার নাম—আরাধ্যা কেওট। কিন্তু প্রশ্ন করার পরও মেয়েটি কিছুই বলতে পারছিল না—না তার বাড়ির ঠিকানা, না বাবা-মায়ের নাম।
আরও পড়ুনঃকালিকাপুর বুডো ক্যারাটে অ্যাকাডেমি: আত্মরক্ষা ও আত্মবিশ্বাস গড়ার নতুন ঠিকানা
এই অবস্থায় হাসপাতালের কর্মীরা বিষয়টি জানায় হাসপাতালের কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের। এরপর পুলিশ আধিকারিকরা নিজ উদ্যোগে খোঁজখবর শুরু করে। কিছু সময়ের মধ্যেই আরাধ্যার পরিবারের সন্ধান পাওয়া যায়। দ্রুত খবর পাঠানো হয় সোনারপুর থানার মাধ্যমে। খবর পেয়ে মেয়ের খোঁজে ছুটে আসেন অশোক ও আয়েশা কেওট। হাসপাতালে এসে মেয়েকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। হাসপাতালের কর্মী ও পুলিশদের উপস্থিতিতে আরাধ্যাকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এই ঘটনা একদিকে যেমন চরম উদ্বেগের জন্ম দিয়েছিল, তেমনই সবার সহযোগিতায় তা পেয়েছে এক স্বস্তির পরিণতি। স্থানীয়রা হাসপাতাল ও পুলিশের ভূমিকায় খুশি। তাঁরা বলেন, এইভাবে যদি সকলে সতর্ক থাকেন ও সাহায্যের হাত বাড়ান, তাহলে বহু বিপদ এড়ানো সম্ভব। সাত বছরের আরাধ্যা যে আজ আবার পরিবারের কোলে ফিরেছে, তার কৃতিত্ব নিঃসন্দেহে সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালের মানবিক কর্মী ও পুলিশদের। মানবতার এই দৃষ্টান্ত সকলের হৃদয় ছুঁয়ে গেল।