কাকদ্বীপঃ বর্তমানে যখন শিক্ষক আন্দোলন ঘিরে গোটা রাজ্য উত্তাল, ঠিক সেই প্রেক্ষাপটে মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের বামানগরের বাসিন্দা তাপস কুমার পড়ুয়া। গত ৩০ এপ্রিল তিনি বামানগর সুবালা উচ্চ বিদ্যালয় (উঃমাঃ) থেকে অবসর গ্রহণ করেন। দীর্ঘ ৩১ বছর ধরে শিক্ষকতা করার পর বিদ্যালয় তাঁকে বিদায় সংবর্ধনা দেয়। কিন্তু অবসরের পরের দিনই তিনি আবার ফিরে আসেন পরিচিত প্রাঙ্গণে—তাঁর প্রিয় বিদ্যালয়ে।
আরও পড়ুনঃ গঙ্গাসাগরের ভাঙন রুখতে সম্ভাব্য সমাধান খুঁজছে রাজ্য, নেদারল্যান্ডের বিশেষজ্ঞদের এলাকা পরিদর্শন
বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির কাছে তাপসবাবু একটি আবেদনপত্র জমা দেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেন, বিনা পারিশ্রমিকে তিনি আবারও ক্লাস নিতে চান। এই খবরে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। কারণ, তাপসবাবুর অবসরের পর স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা দাঁড়ায় মাত্র ২৪ জন, যেখানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। তার মধ্যে দুইটি হোস্টেলে রয়েছে প্রায় ১১০০ জন আবাসিক শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তপন কুমার মন্ডল বলেন, “তাপসবাবু না ফিরলে আমরা চরম সমস্যায় পড়তাম। তিনি প্রতিদিন আগের মতোই সপ্তাহে প্রায় ২৫টি ক্লাস নিচ্ছেন।”
তাপসবাবু জানান, “১৯৯৩ সালে আমি এই স্কুলে যোগ দিয়েছিলাম। বিদ্যালয় আমার কাছে শুধুই কর্মস্থল নয়, এ আমার আনন্দ নিকেতন। ছাত্রছাত্রীরা আমার সন্তানের মতো। যতদিন পারি, তাদের পড়িয়ে যাব।” বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির সভাপতি বিকাশ দাস এবং সদস্য অদৃশংকর ঢালীরাও তাপসবাবুর এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। এক নিঃস্বার্থ শিক্ষক, যিনি শুধুমাত্র দায়িত্ব নয়, ভালোবাসার টানে ফিরে এসেছেন তাঁর শিক্ষার্থীদের কাছে—তাঁর নাম তাপস কুমার পড়ুয়া।
