
সোনারপুরঃ রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে একশো বছরেরও বেশি পুরানো জলাভূমি ভরাটের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রায় এক বিঘা জায়গাজুড়ে থাকা এই পুরানো পুকুরটির অধিকাংশ অংশ ইতিমধ্যেই ভরাট করা হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা যায়, জল মেশিনের মাধ্যমে তুলে অন্যত্র ফেলা হচ্ছে, এবং ধাপে ধাপে পুকুর ভরাটের কাজ চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, অঙ্কুর নামে এক ব্যক্তি এই জলাভূমি ভরাটের কাজে যুক্ত রয়েছেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক ব্যক্তিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দিতে রাজি হননি এবং এই প্রসঙ্গে তাঁকে জড়াতে নিষেধ করেন। তবে বিষয়টি জানাজানি হতেই স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি তোলেন।
আরও পড়ুনঃ পানীয় জলের সংযোগ নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ অস্বীকার বারুইপুর পুরসভার
এই ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই সোনারপুর আপডেট সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে রাজপুর সোনারপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লব কুমার দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। অভিযোগের গুরুত্ব বুঝেই তিনি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং নিজে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান। ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখে তিনি স্পষ্ট জানান, “জলাভূমি কোনোভাবেই ভরাট করা যাবে না। এই পুকুর ভরাট করার চেষ্টা হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও জানান, “যে অংশ ইতিমধ্যেই ভরাট করা হয়েছে, সেই অংশের মাটি তুলে ফেলা হবে। জলাভূমিটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।” পুরসভার পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কড়া নজরদারির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, দীর্ঘদিন ধরেই ওই জলাভূমিটি সংরক্ষণের দাবি উঠছিল। অনেকেই আশঙ্কা করছিলেন যে, অবৈধভাবে জলাশয়টি ধাপে ধাপে ভরাট করা হতে পারে। এবার সেই আশঙ্কাই সত্যি হলো। তবে পুরসভার তৎপরতায় তারা কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছেন। পরিবেশবিদদের মতে, জলাভূমি ভরাট হলে পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হয়, জলস্তরের অবনতি ঘটে এবং আশপাশের এলাকার বন্যা পরিস্থিতি আরও প্রকট হয়ে ওঠে। তাই জলাভূমি রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। রাজপুর সোনারপুর পুরসভার এই উদ্যোগে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে তাঁরা চান, প্রশাসন যেন ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে তা নিশ্চিত করে। এই ঘটনার পর, পুরসভার তরফে কড়া নজরদারি চালানো হবে বলে জানানো হয়েছে। জলাভূমি সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, এ ধরনের কাজ আইনত অপরাধ। ফলে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে পারে প্রশাসন। জলাভূমির আগের রূপ ফিরিয়ে দেওয়া হয় সেদিকেই তাকিয়ে এলাকার বাসিন্দারা।