নরেন্দ্রপুরঃ আত্মঘাতী জামাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত এলাকায়। এই ঘটনায় মৃতের শ্বশুরকে গ্রেফতার করেছে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ। ধৃতের নাম শ্যাম মন্ডল। ধৃতকে আজ বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত যুবকের নাম সৌমেন বারুই। তিনি নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার বাসিন্দা। পেশায় ছিলেন একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী। দীর্ঘ কয়েক বছর আগে তার বিয়ে হয় সুপর্না মন্ডলের সঙ্গে। প্রথমদিকে স্বাভাবিকভাবে চললেও ধীরে ধীরে স্ত্রীর দাবি-দাওয়া বাড়তে থাকে। অভিযোগ, স্ত্রীর ক্রমাগত চাহিদা ও চাপের মুখে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিলেন সৌমেন। আয় সীমিত থাকায় স্ত্রীর সকল ইচ্ছা পূরণ করতে না পারায় শুরু হয় দাম্পত্য অশান্তি। দিনকে দিন এই অশান্তি বাড়তে থাকে। সৌমেনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, স্ত্রীর পাশাপাশি শ্বশুর শ্যাম মন্ডলও জামাইয়ের উপর নানা ভাবে মানসিক চাপ সৃষ্টি করত।
আরও পড়ুনঃসুভাসগ্রামে ফাঁকা বাড়িতে দুসাহসিক চুরি, লক্ষাধিক টাকার সম্পত্তি খোয়া, আতঙ্কে এলাকার বাসিন্দারা
অভিযোগ, এই চাপ আর সহ্য করতে না পেরে গত ২৬শে মার্চ নিজের বাড়িতে আত্মঘাতী হন সৌমেন বারুই। তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরেই সৌমেনের বোন লক্ষ্মী নস্কর নরেন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার দাবি, ভাইকে মানসিক নির্যাতন করে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করা হয়েছে। তিনি এই ঘটনায় শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজুর আবেদন জানান। পুলিশ তদন্তে নেমে প্রাথমিকভাবে শ্যাম মন্ডলকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের দাবি, ধৃত শ্যাম মন্ডল জামাইয়ের উপর চাপ সৃষ্টি করতেন, যার জেরে সৌমেন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত হিসেবে সন্দেহের তালিকায় রয়েছে সৌমেনের স্ত্রী সুপর্না মন্ডল। তবে ঘটনার পর থেকেই পলাতক সুপর্না। পুলিশ তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। বিভিন্ন জায়গায় তার সম্ভাব্য উপস্থিতির খোঁজে হানা দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শান্ত স্বভাবের সৌমেন সকলের সঙ্গে মিশে চলতেন। তার এমন পরিণতিতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পাশাপাশি স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পলাতক সুপর্না মন্ডলকে দ্রুত গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। তদন্তের পরেই পুরো ঘটনা স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ।
