
সোনারপুরঃ সরকারি চাকরির লোভ দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা চালিয়ে আসছিল এক ব্যক্তি। শেষমেশ তার জালে ধরা পড়লেন এক সরকারি কর্মী। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল সোনারপুর থানার পুলিশ। ধৃতের নাম মঙ্গল বেরা। সে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার চণ্ডীপুর এলাকার বাসিন্দা হলেও, দীর্ঘদিন ধরে সোনারপুরে ভাড়ায় থাকত বলে জানা গিয়েছে। তবে কোনও নির্দিষ্ট ঠিকানায় নয়—অন্যদের নজর এড়াতে স্থান বদলে বদলে থাকত সে।
আরও পড়ুনঃ সোনারপুর মোড়ে মানবিক উদ্যোগ: পথচারীদের জন্য ‘এক গ্লাস জল’ ও গুড় বাতাসা
পুলিশ সূত্রে খবর, কুলপি থানার অন্তর্গত এলাকার বাসিন্দা পার্থ সারথী বর্মন বর্তমানে রাজ্য সরকারের জেল ডিপার্টমেন্টে কর্মরত। একসময় সোনারপুরে মেসে থেকে পড়াশোনা করতেন এবং চাকরির প্রস্তুতি নিতেন। তখনই তার সঙ্গে আলাপ হয় মঙ্গল বেরা নামে ওই ব্যক্তির। নিজেকে ‘কানেকশনওয়ালা’ হিসাবে তুলে ধরে, মঙ্গল দাবি করে—তার বিভিন্ন দপ্তরে ‘উচ্চপদস্থ’ পরিচিত আছে এবং তার মাধ্যমে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়া সম্ভব। এই প্রলোভনে পা দেন পার্থবাবু। ধাপে ধাপে মোট ১৬ লাখ টাকা তুলে দেন মঙ্গলের হাতে—যার মধ্যে ৮ লাখ টাকা অনলাইনে ট্রান্সফার করা হয়, আর বাকি ৮ লাখ টাকা নগদে দেওয়া হয়। টাকা নেওয়ার পর কেটে যায় অনেক সময়, কিন্তু চাকরির নামগন্ধও মেলে না। সন্দেহ বাড়তেই শেষপর্যন্ত সোনারপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন পার্থ সারথী বর্মন।
অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে সোনারপুর থানার পুলিশ। একাধিক সূত্র ধরেই শেষমেশ হদিশ মেলে মঙ্গল বেরার, তাকে গ্রেফতার করে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এছাড়াও, তার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা, তা নিয়েও তদন্ত চলছে। সতর্ক করছেন তদন্তকারীরা—এই ধরনের প্রতারক থেকে সাবধান থাকতে হবে সকলকে। সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে কেউ টাকা চাইলে, সঙ্গে সঙ্গেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।