
সোনারপুরঃ সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের কালিকাপুরের ঘোষপাড়ার তরুণ ঘোষ (৩৮) শনিবার, ১৪ই মার্চ, দোলযাত্রার দিন দুর্ভাগ্যজনক একটি ঘটনার শিকার হন। তিনি ও তার দুই বন্ধু কেনাকাটার উদ্দেশ্যে চম্পাহাটির দিকে যাচ্ছিলেন। দুপুর দেড়টার দিকে তারা রাস্তায় পড়ে যাওয়ার পর, উল্টো দিক থেকে আসা একটি বোলেরো পিকআপ ভ্যানের পেছনের চাকা তরুণের মাথার উপর দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলে উদ্ধার করে কালিকাপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তরুণ ঘোষ একটি প্রাইভেট সংস্থায় কর্মরত ছিলেন এবং তার মৃত্যু পরিবারের জন্য এক গভীর শোকের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি স্ত্রী টুম্পা ঘোষ এবং আট বছরের এক মেয়ে রেখে গেছেন। টুম্পা বর্তমানে চার মাসের অন্তসত্ত্বা, যা এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। তরুণের আকস্মিক মৃত্যুতে তার পরিবার ও প্রতিবেশীদের মধ্যে ব্যাপক শোক নেমে এসেছে, কারণ তিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য।
আরও পড়ুনঃসোনারপুরে নতুন কমিউনিটি হল, আজ শুভ শিলান্যাস
এই এক মর্মান্তিক ঘটনা এলাকার সমাজের চিত্রকেও প্রভাবিত করেছে। বিধায়ক লাভলী মৈত্র পরিস্থিতির গুরুত্ব উপলব্ধি করে মৃত তরুণের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। তিনি পরিবারের বাড়িতে গিয়ে শোক প্রকাশ করেন এবং তাদের জন্য সহমর্মিতা জানান। বিধায়ক পরিবারকে আশ্বস্ত করেন যে, তিনি তাদের সবরকম সহায়তায় প্রস্তুত আছেন এবং তাদের দুঃসময়ে একা অনুভব করতে দেবেন না। বিধায়কের কাছে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন টুম্পা ঘোষ। তার সামনে এখন শুধুই হতাশা ও অন্ধকার। কীভাবে তিনি এখন তার পরিবারকে সামাল দেবেন, তার দুই সন্তানের প্রয়োজনে কিভাবে খাবার জোগাড় করবেন—এই সবই তাকে চিন্তাতে ভরিয়ে দিয়েছে। তার স্বামী যে পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছেলে ছিলেন, তার মৃত্যুর পর তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার উদ্বেগের সীমা নেই।
লাভলী মৈত্র টুম্পা ঘোষকে এসময় সমর্থন জানিয়ে বলেন, “আপনি একা নন। আমি এখানে আছি। আপনার সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করব। আপনাদের দুর্ভোগের দায় আমি নিতে চাই।” বিধায়কের এই কথাগুলো কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে টুম্পার মনে, যদিও বাস্তবতা কাটিয়ে উঠার জন্য প্রয়োজন আরও অনেক কিছু। এভাবে, স্থানীয় সমাজের একটি গুরুত্বপুর্ণ ঘটনা, বিধায়কের সহানুভূতি, এবং একটি পরিবারের একদিকে শোক অন্যদিকে নতুন আশা—সবই মিলিয়ে এই পরিস্থিতি এক ভিন্ন দৃষ্টিকোণ তুলে ধরে। এখন সবার চোখ টুম্পার দিকে, যারা সামনে নতুন করে জীবনযাত্রা শুরু করার সংগ্রামে রয়েছেন। বিধায়ক লাভলী মৈত্রের প্রতিশ্রুতি এই কঠিন সময়ে তাদের কিছুটা সাহস ও শক্তি দেবে, কিন্তু বাস্তবতার কঠিন চেহারা তাদের সামনে এখনও বিদ্যমান।