সোনারপুরঃ সোনারপুরের কামরাবাদ দাসপাড়ায় অবশেষে পূরণ হল দীর্ঘদিনের দাবি। ৫০ বছরের পুরনো রাধাকৃষ্ণ মন্দির ভগ্নপ্রায় অবস্থায় থাকলেও, এবার জেলা পরিষদের অর্থানুকূল্যে তা নবনির্মিত ও সুসজ্জিত হয়ে নতুন রূপ পেয়েছে। এই মন্দির সংস্কারের জন্য প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। অত্যন্ত মনোরম ও সুন্দরভাবে মন্দিরটি সাজিয়ে তোলা হয়েছে, যা দেখে খুশি এলাকার বাসিন্দারা। শুধু মন্দির সংস্কারই নয়, এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্যও জেলা পরিষদ থেকে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করে নতুন ড্রেন ও কংক্রিট রাস্তা তৈরি করা হয়েছে, যা স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবির মধ্যে অন্যতম ছিল। রাস্তার পাশাপাশি এলাকার আলো সমস্যার সমাধানে দাসপাড়া মোড়ে ২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি বাতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে, যা রাতের অন্ধকারে যাতায়াতের ক্ষেত্রে মানুষকে অনেক সুবিধা দেবে।
আরও পড়ুনঃ সোনারপুরে দুই নতুন রাস্তার উদ্বোধন, যাতায়াতে সুবিধা পাবেন হাজারো বাসিন্দা
নবনির্মিত মন্দির, রাস্তা, ড্রেন ও বাতিস্তম্ভের উদ্বোধন করেন সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ও বিশিষ্ট অভিনেত্রী লাভলী মৈত্র। তার সঙ্গে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পৌরমাতা অনিতা বসু, জেলা পরিষদের আধিকারিক রাজু দাস এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিধায়ক লাভলী মৈত্র বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই এলাকাবাসীর এই দাবি ছিল। তাদের প্রার্থনা পূরণ হওয়ায় আমরাও আনন্দিত। ধর্মীয় স্থান সংরক্ষণের পাশাপাশি, নাগরিক পরিষেবা উন্নয়নের জন্য সরকার সবসময়ই সচেষ্ট।“ স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, মন্দির সংস্কার ও নতুন রাস্তা হওয়ায় তারা খুবই খুশি। অনেকদিন ধরেই রাস্তা ও ড্রেনের বেহাল অবস্থার কারণে বর্ষাকালে জল জমে থাকত, যা সমস্যার সৃষ্টি করত। বাতিস্তম্ভ না থাকায় রাতের বেলা চলাফেরা করতে অসুবিধা হত। নতুন এই উন্নয়নগুলি হওয়ায় এখন এলাকাবাসী অনেকটাই স্বস্তি পেলেন। এক স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, “ছোটবেলা থেকে এই মন্দিরটিকে দেখে আসছি, কিন্তু অনেক বছর ধরে এটি ভগ্নপ্রায় অবস্থায় ছিল। এখন নতুন রূপে ফিরে আসায় আমরা সবাই আনন্দিত।“ এক তরুণের কথায়, “আগে সন্ধ্যার পর এই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করাটা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এখন আলো লাগায় এবং কংক্রিট রাস্তা হওয়ায় অনেক সুবিধা হবে।”
জেলা পরিষদের জেলা বাস্তুকার রাজু দাসের সহযোগিতায় এই কাজ দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। তিনি জানান, ভবিষ্যতে আরও পরিকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা রয়েছে। এলাকায় আরও রাস্তা সংস্কার, নিকাশি ব্যবস্থা উন্নয়ন এবং আলোকসজ্জার কাজ করা হবে। সোনারপুরের কামরাবাদ দাসপাড়ায় এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলো শুধু এলাকাবাসীর দৈনন্দিন জীবনকেই সহজ করবে না, বরং ধর্মীয় ও সামাজিক ক্ষেত্রেও এক ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। স্থানীয়রা আশা করছেন, প্রশাসন ভবিষ্যতেও এ ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ চালিয়ে যাবে, যাতে এলাকার পরিবেশ আরও উন্নত হয়।
