
বারুইপুরঃ বারুইপুরে পোষ্য নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ ৷ থানায় অভিযোগ দায়ের ৷ ঘটনার তদন্তে পুলিশ ৷ বারুইপুর থানার হাড়াল এলাকার দেবাশিস মন্ডল সম্প্রতি এক অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন। তার কেনা একটি শিহ–তজু (Shih Tzu) প্রজাতির কুকুরকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা অর্জুন মন্ডলের ছেলে অমিত মন্ডলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন দেবাশিসের পরিবার, বিশেষ করে তার স্ত্রী ও মা। দেবাশিস মন্ডল গত ১৯শে জানুয়ারি কলকাতার গালিফ স্ট্রিট থেকে ১৩,৫০০ টাকা দিয়ে এই কুকুরটি কেনেন। কেনার সময় কুকুরটির বয়স ছিল মাত্র দুই মাস। এটি তার ছয় বছরের ছেলে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অত্যন্ত প্রিয় ছিল। বাবা নিতাই চন্দ্র মন্ডল, মা কাকলী মন্ডল, স্ত্রী তৃষা মন্ডল এবং ছেলে, সবাই কুকুরটির সাথে স্নেহের বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ সৎবাবার বিরুদ্ধে নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ
ঘটনাটি ঘটে ২১শে মার্চ সন্ধ্যায়, যখন দেবাশিস বাড়িতে ছিলেন না। স্থানীয় প্রতিবেশীদের সামনেই দুইজন লাঠিধারী ব্যক্তি বাড়িতে ঢুকে কুকুরটিকে জোর করে নিয়ে যায়। বাড়িতে তখন শুধুমাত্র মহিলা সদস্যরা ছিলেন, যারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং প্রতিরোধ করার সাহস পাননি। অভিযোগের আঙুল উঠেছে তৃণমূল নেতা অর্জুন মন্ডলের ছেলে অমিত মন্ডলের দিকে, যিনি সরাসরি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং কুকুরটি নিয়ে যান। কুকুরটিকে ফেরত পাওয়ার আশায় দেবাশিস মন্ডল ২৪শে মার্চ অমিত মন্ডলের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি হেনস্থার শিকার হন। অভিযোগ, অমিত মন্ডল ও তার সহযোগীরা তাকে মারধর করে এবং তার বাইক ভাঙচুর করে। এই ঘটনার পরই দেবাশিস বারুইপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অমিত মন্ডল অবশ্য তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, কুকুরটি তাদেরই এবং দেবাশিস মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন। বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েতে আলোচনার জন্য একটি বৈঠক হয়, যেখানে ব্লক পশু চিকিৎসক কুকুরটির বয়স নির্ধারণ করেন। পরীক্ষা করে তিনি জানান, কুকুরটির বয়স ১৬ মাস, যা দেবাশিসের দাবির সাথে মিলছে না। একই কথা বলেন অমিত মন্ডলের স্ত্রী সঙ্গীতা মন্ডলও। এই ঘটনার পর থেকে দেবাশিসের পরিবার আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে মহিলা সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বারুইপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে যে, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত কুকুরটি দেবাশিসের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি।