
সোনারপুরঃ সিপিএম ফের আন্দোলনের পথে। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ও তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের না করায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছে তারা। সোমবার সোনারপুরের ক্ষিরিশতলা থেকে সোনারপুর থানা পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করে বাম কর্মীরা। সিপিএমের আইনজীবী নেতা সায়ন ব্যানার্জি উপস্থিত ছিলেন এই মিছিলে। সায়ন ব্যানার্জি জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী থানায় অভিযোগ গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক। অথচ বারবার থানায় গেলেও শুভেন্দু অধিকারী ও হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিতে চাইছে না পুলিশ। পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “মমতার পুলিশ শুভেন্দু অধিকারীকে বাঁচাতে চাইছে। বিজেপি ও তৃণমূল একসঙ্গে মিলেমিশে চলছে, এটা তার আরও এক প্রমাণ।” এই প্রসঙ্গে বারুইপুর পুলিশ জেলার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযোগটি বারুইপুর এসিজেএম আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশ পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যদিও পুলিশের এই অবস্থান মানতে নারাজ সিপিএম।
আরও পড়ুনঃ বেআইনীভাবে জলাশয় ভরাট রুখতে অভিনব পদক্ষেপ সোনারপুর ব্লক প্রশাসনের
প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেওয়া সিপিএম কর্মীদের অভিযোগ, তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে যে অন্দরমহলের বোঝাপড়া রয়েছে, তা আরও স্পষ্ট হচ্ছে। একদিকে তৃণমূল সরকার শুভেন্দু অধিকারীকে রক্ষা করছে, অন্যদিকে পুলিশ নিরপেক্ষভাবে কাজ না করে দলদাসের ভূমিকা পালন করছে। স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব হুঁশিয়ারি দিয়েছে, দ্রুত অভিযোগ না নিলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবে। প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হবে তারা। এ বিষয়ে সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সোনারপুর থানা ঘেরাওয়ের সময় বাম কর্মীরা পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। তাদের দাবি, আইনের শাসন ফিরিয়ে আনতে হলে পুলিশের এই পক্ষপাতমূলক ভূমিকার বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বেরও বক্তব্য, রাজ্যে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন আজ ধূলিসাৎ হতে বসেছে। প্রশাসন নিরপেক্ষতার বদলে রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত।
এই ইস্যুতে রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অবশ্য সিপিএমের এই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের দাবি, রাজ্য সরকার আইন মেনেই কাজ করছে এবং পুলিশের বিরুদ্ধে অহেতুক মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। সিপিএমের এই প্রতিবাদ কর্মসূচির পর রাজনৈতিক মহল মনে করছে, রাজ্যে বিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে চাপানউতোর আরও বাড়বে। শুভেন্দু অধিকারী ও হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়, সেদিকে এখন নজর রাজনৈতিক মহলের।