
সোনারপুরঃ এই সমাজে যেখানে মানুষ নিজেরটাই আগে ভাবে, সেখানে দাঁড়িয়ে দীপক দাস, যিনি সবার কাছে পরিচিত “বুধো দা“ নামে, হয়েছেন এক আলোর দিশারি। নিজের রোজগারে, নিজের গাঁটের টাকায় — তিনি দেড়শোরও বেশি ভবঘুরে ও অসহায় মানুষের মুখে প্রতিদিন অন্ন তুলে দিচ্ছেন, নিরলসভাবে, পঁচিশ বছর ধরে। এই মহৎ যাত্রার শুরু ২০০০ সালে। তখন থেকেই শুরু হয়েছিল তার প্রতিজ্ঞা— “যতটুকু পারি, ততটুকুই পাশে থাকব যাদের কেউ নেই।” আজ সেই প্রতিজ্ঞা হয়ে উঠেছে অভ্যাস, হয়ে উঠেছে হাজার মানুষের জীবনরস।
আরও পড়ুনঃদিনে দুপুরে চম্পাহাটি জুয়েলারি হাউসে ডাকাতি, গুরুতর জখম কর্মচারী, উধাও ৪০ লক্ষ টাকার সোনা
দীপক দাসের একটি নিজস্ব ব্যবসা আছে, পাশাপাশি একটি বাগানবাড়ি। সেখান থেকেই যা আয় হয়, তা দিয়েই তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন এই অনন্য উদ্যোগ। সোনারপুর, সুভাসগ্রাম, কোদালিয়া, মল্লিকপুর, গড়িয়া পাটুলী – এমন অনেক জায়গার ভবঘুরে, সহায় সম্বলহীন বৃদ্ধ ও অসুস্থ মানুষজন আজ তার উপর নির্ভরশীল। প্রতিদিন সকাল হলে, অন্যদের মতো বিশ্রামে নয়, তিনি বেড়িয়ে পড়েন বাজারে। নিজেই করেন রান্না। তারপর সেই খাবার তুলে দেন নিজের ছোট মারুতি ভ্যানে। এলাকার অলিগলি ঘুরে পৌঁছে যান সেইসব মানুষের কাছে, যারা তার পথ চেয়ে বসে থাকে খালি পেটে। তার গাড়ির আওয়াজ শোনামাত্রই আশেপাশের মানুষ ছুটে আসে। ওরা জানে, এ গাড়িটা মানে আজকের দিনের বেঁচে থাকার রসদ।
বুধো দা শুধু খাবার দেন না — দেন ভালোবাসা, দেন মর্যাদা। তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন, সমাজ বদলাতে বড় কিছু নয়, দরকার শুধু একটা সদিচ্ছা। সোনারপুর আপডেট-এর পক্ষ থেকে আমরা জানাই বুধো দা–কে কুর্নিশ। আপনার মতো মানুষের জন্যই আজও মানবিকতা বেঁচে আছে। আপনি শুধু রিয়েল হিরো নন, আপনি আমাদের সমাজের নির্ভরতা।