
বারুইপুরঃ বারুইপুর জেলা পুলিশের বড় সাফল্য! এক অনলাইন প্রতারণা মামলার তদন্তে নেমে ২ কোটি ৫৫ লাখ ৪২৭ টাকা উদ্ধার করল বারুইপুর পুলিশ। এটি এখনও পর্যন্ত জেলার সর্বোচ্চ উদ্ধার হওয়া প্রতারণার অর্থ। গুজরাতের একটি প্রতারণা চক্রের কাছ থেকে এই টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার পলাশ চন্দ্র ঢালি।
অনলাইনে বিনিয়োগের ফাঁদে প্রতারিত নরেন্দ্রপুর থানার বাসিন্দা অমিত কুমার কুণ্ডু, যিনি একটি বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত ছিলেন এবং সম্প্রতি অবসর গ্রহণ করেছেন, তিনি এই প্রতারণার শিকার হন। অনলাইনে বিনিয়োগের কিছু স্কিম দেখে তিনি আকৃষ্ট হন এবং ধাপে ধাপে তার সঞ্চিত টাকা সেখানে বিনিয়োগ করেন। প্রাথমিকভাবে লাভের আশ্বাস পেলেও, পরবর্তীকালে টাকা তোলার চেষ্টা করলে তিনি বুঝতে পারেন যে প্রতারিত হয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি ৩১শে জানুয়ারি বারুইপুর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
তদন্ত ও টাকা উদ্ধারের বিশাল সাফল্য অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ দ্রুত তদন্তে নামে এবং বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করে ৫৬ লক্ষ টাকা ফ্রিজ করে। এরপর আরও গভীর তদন্ত চালিয়ে সোর্স ও অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে গুজরাতে অবস্থিত একটি সুসংগঠিত প্রতারণা চক্রের সন্ধান মেলে। চক্রের মূল হোতা ইতিমধ্যেই পুনে পুলিশের হেফাজতে থাকা এক সাইবার অপরাধী। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং বিভিন্ন সূত্র ধরে তদন্ত চালিয়ে বাকি টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
পুলিশ সুপারের বার্তা: সচেতন থাকুন বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার পলাশ চন্দ্র ঢালি অনলাইনে বিনিয়োগের বিষয়ে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “ভুল জায়গায় বিনিয়োগ করা উচিত নয় এবং অস্বাভাবিক উচ্চ রিটার্নের লোভে পড়ে বিনিয়োগ করলে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।” পাশাপাশি, তিনি ডিজিটাল প্রতারণা ও সাইবার অপরাধ সম্পর্কেও জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
টাকা ফিরে পেয়ে খুশি ভুক্তভোগী অমিত কুমার কুণ্ডু পুলিশের এই উদ্যোগে অত্যন্ত খুশি। তিনি বলেন, “বারুইপুর পুলিশের তৎপরতায় আমার টাকা ফিরে এসেছে। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।” এই ঘটনায় অনলাইন বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হয়ে থাকবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রতারণার শিকার না হন।
বারুইপুর জেলা পুলিশের এই সাফল্য আবারও প্রমাণ করল যে সঠিক তদন্ত ও দ্রুত পদক্ষেপ নিলে সাইবার প্রতারণার মোকাবিলা করা সম্ভব।