
সোনারপুরঃ ক্যান্সারের যন্ত্রণা আর মানসিক অবসাদ সহ্য করতে না পেরে অবশেষে আত্মঘাতী হলেন এক প্রৌঢ়। মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার সোনারপুর থানা এলাকার লাঙলবেড়িয়ায়। মৃতের নাম প্রশান্ত সরদার (৫৫)। জানা গিয়েছে, বুধবার সন্ধেবেলায় স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে দেখতে পান বাড়ির সামনের একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছেন প্রশান্তবাবু। সঙ্গে সঙ্গে তারা ছুটে গিয়ে বাড়ির লোককে খবর দেন। পরে পরিবারের লোকেরা তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যান সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় তিন মাস আগে গলায় ক্যান্সার ধরা পড়ে প্রশান্ত সরদারের। ক্যান্সার ধরা পড়ার পর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। চিকিৎসকরা জানিয়ে ছিলেন, রোগ অনেকটাই ছড়িয়ে পড়েছে। খুব বেশি কিছু করার নেই। সেই থেকেই অবসাদ আরও গভীর হতে থাকে তাঁর মধ্যে।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ক্যান্সারের জন্য খাবার খেতে পারতেন না প্রশান্তবাবু। গলায় সবসময় এক অস্বস্তি বোধ করতেন। একেবারে শেষ পর্যায়ে গিয়েই ক্যান্সার ধরা পড়ায় তাঁর চিকিৎসাও বিশেষ এগোয়নি। বিগত কয়েকদিন ধরেই সকলের সঙ্গে কথা বলা কমিয়ে দিয়েছিলেন। নিজের মধ্যে গুটিয়ে নিয়েছিলেন নিজেকে। এদিন সকালে বাড়ির লোকজন ঘরের বাইরে খুঁজতে গিয়ে দেখতে পান এই মর্মান্তিক দৃশ্য। এই ঘটনার জেরে এলাকায় নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, প্রশান্তবাবু খুবই শান্ত স্বভাবের মানুষ ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর অসুস্থতার খবর সবাই জানতেন। কিন্তু এমন পরিণতি হবে তা ভাবতে পারেননি কেউ। ঘটনার খবর পেয়ে সোনারপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। পাশাপাশি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যার ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ মৃতের পরিবার। পরিবারের সদস্যদের কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের মুখেও শোকের ছাপ। মৃত্যুর আগে মানসিকভাবে কতটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন প্রশান্তবাবু — তা নিয়ে কথা বলছেন প্রতিবেশীরাও। ক্যান্সারের মতো কঠিন রোগের সঙ্গে লড়াইয়ে শেষপর্যন্ত হার মানলেন তিনি।