
সোনারপুর: নববর্ষের উৎসবের আনন্দ মুহূর্তে রক্তাক্ত ঘটনার সাক্ষী থাকল দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের ঘাসিয়াড়া এলাকা। রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সঞ্জীব ঘোষ নামে এক যুবক প্রেমঘটিত কারণে হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পর আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। পুলিশে অভিযোগ দায়ের হলেও এখনও গ্রেফতার হয়নি অভিযুক্ত। স্থানীয় সূত্রে খবর, সঞ্জীব ঘোষ ঘাসিয়াড়া এলাকার বাসিন্দা এক তরুণীর সঙ্গে রেজিস্ট্রি বিয়ে করেন কিছুদিন আগেই। তবে সেই তরুণীকে আগে থেকেই পছন্দ করত এলাকারই আরেক যুবক, যার নাম গুড্ডু। তরুণীর বিয়ের বিষয়টি গুড্ডু মেনে নিতে পারেনি বলেই মনে করছে স্থানীয়রা। দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কের ইতি টানায় গুড্ডু ক্ষুব্ধ ছিল বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুনঃ নববর্ষে নতুন স্বাদের পথচলা, অভিনব ভাবনায় শুরু হল ‘কান্তিবাবু স্ট্যু অ্যান্ড স্টকস’
ঘটনার দিন ছিল নববর্ষ। এলাকার একটি জলসার অনুষ্ঠানে সঞ্জীব উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই আচমকা গুড্ডু তাঁর উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সঞ্জীবকে লক্ষ্য করে লাঠি ও ইট নিয়ে চড়াও হয় গুড্ডু ও তার কিছু সঙ্গী। গুরুতর চোট লাগে সঞ্জীবের মাথায় ও শরীরের একাধিক জায়গায়। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, ভাগ্যক্রমে বড়সড় বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছেন তিনি। এই ঘটনার পর সঞ্জীব ঘোষের পরিবার সোনারপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত গুড্ডুকে গ্রেফতার করা যায়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হলেও সে পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে। আক্রান্ত সঞ্জীবের পরিবারের দাবি, বিয়ের পর থেকেই তরুণীর প্রাক্তন প্রেমিকের তরফে একাধিকবার হুমকি পেয়েছিলেন সঞ্জীব। বিষয়টি নিয়ে আগেও স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু তা সফল হয়নি। এবার সরাসরি হামলায় প্রাণহানির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এই ঘটনার জেরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন সঞ্জীব ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, যতদিন না অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, ততদিন তাঁরা নিরাপদ বোধ করছেন না। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই বলছেন, প্রেমের সম্পর্কের সমাপ্তি এবং বিয়ে— এই দুই ঘটনা অনেক সময়েই অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু প্রকাশ্যে এমন হামলা নিন্দনীয়। প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত গুড্ডুর খোঁজে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার পেছনে আর কেউ জড়িত আছে কি না, তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।