নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বর্তমানে প্রচলিত ডিগ্রি কোর্সের পাশাপাশি কর্মমুখী কোর্সের প্রতিও আগ্রহ বেড়েছে পড়ুয়াদের। শুধুমাত্র জ্ঞানবৃদ্ধি নয়, কারিগরি কোর্সের মাধ্যমে এই চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার যুগে নিজেদের চাকরির উপযোগী করে তুলতে চাইছেন পড়ুয়ারা। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারও বিভিন্ন পদক্ষেপ করেছে। সেই মোতাবেক দেশের বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হয়েছে ইউজিসি (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন) স্বীকৃত ভোকেশনাল এডুকেশন-এ ব্যাচেলর্স (বিভোক) ডিগ্রি এবং কমিউনিটি কলেজ স্কিমের অধীনে ডিপ্লোমা কোর্স। রাজ্যেও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ডিরোজিও মেমোরিয়াল কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেই মর্মে কলেজের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞপ্তি। চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তির জন্য ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া। ভারত সরকার 2013 সালে মাল্টি পয়েন্ট এক্সিটের সুবিধাসহ এই বিভোক ডিগ্রী প্রোগ্রাম চালু করে। এই কোর্সটিকে ভারত সরকার 2014 সালের জুলাই মাসের The Gazzette of India র 27 নম্বর সংখ্যায় স্নাতকের সমতুল মর্যাদা দেয়। অর্থাৎ বিএ, বিএসসি, বিকম এর মতই বিভোকে ভর্তি হয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করতে পারে। তার সঙ্গে এই বছর থেকে ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশন অনুমোদন দিয়েছে ডুয়েল ডিগ্রি অর্জন করার। অর্থাৎ কোন ছাত্র-ছাত্রী একই সঙ্গে সরকার অনুমোদিত দুটি কোর্সে ভর্তি হতে পারবে। এ ক্ষেত্রে যেসব ছাত্রছাত্রী বিএ, বিএসসি, বিকম, বিবিএ র মত কোর্সে ভর্তি হবে বা হয়েছে তারা এই শিক্ষাবর্ষ থেকে একই সঙ্গে বি ভোক বা কমিউনিটি কলেজ স্কীমে ভর্তি হতে পারবে। এই সুযোগ ছাত্র-ছাত্রীদের কেরিয়ার তৈরীর ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে খুবই উপকারী হবে। এই প্রসঙ্গে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. সৈকত মণ্ডল জানালেন- ‘ আমাদের কলেজে বি.ভোক বা কমিউনিটি কলেজ স্কিমের অধীনে যেসব ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা কোর্স পড়ানো হয়, সবই বিপুল চাহিদাসম্পন্ন, কর্মমুখী কোর্স। আর সে কারণেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে ছাত্রছাত্রীরা পড়তে আসে, এমনকি প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ থেকেও নিয়মিত ছাত্রছাত্রীরা পড়তে আসে। অত্যাধুনিক পরিকাঠামো ও উন্নতমানের হাতেকলমে প্রশিক্ষণ এখানে দেওয়া হয়। যার ফলে তারা দক্ষ হয়ে ওঠে এতটাই যে, এখান থেকে পাশ করার প্রত্যেকেই কোনও না কোন কাজ পেয়ে যায়। “
এছাড়াও এই বিভোক কোর্সের আরেকটি সুবিধা হল – 10+2 প্যাটার্নে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে যেকোনো বয়সের ,যে কোন স্ট্রিমে এমনকি ভোকেশনাল কোর্সে উচ্চমাধ্যমিক পাস করা ছাত্রছাত্রীরা এই কোর্সে ভর্তি হতে পারে। তিন বছরের এই বিভোক কোর্সের পাঠ্যক্রম বর্তমানে ইউজিসির নির্দেশ অনুসারে NEP (National Educational Policy) অনুযায়ী ছয় মাসের ছয়টি সেমিস্টারের বিভক্ত। এভাবেই এই ধরনের ব্যাচেলর ডিগ্রী তে ছাত্র-ছাত্রীদের একইসাথে বিষয়গত শিক্ষা ও কারিগরি skill based পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে কর্মোপযোগী , জীবিকাভিত্তিক শিক্ষা দিয়ে সহজেই কেরিয়ার গড়ার পথে কয়েক কদম এগিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে ভারত সরকার। আর পশ্চিমবঙ্গে এই ধরনের পড়াশোনা যেসব প্রতিষ্ঠানে শুরু হয়েছে তাদের মধ্যে অগ্রগণ্য পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় (West Bengal State University) অধীনস্থ সরকার পোষিত কলেজ ডিরোজিও মেমোরিয়াল কলেজ। ভারত সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনস্থ ইউজিসি সরকার ঘোষিত এই কলেজে তিনটি বি ভোক কোর্সের অনুমোদন দিয়েছে।
এই কোর্সগুলিতে Theory-র থেকে Practical-এর উপর এবং Hands on training -এর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। এই কলেজে যেসব B.Voc কোর্সের পঠনপাঠন চালু রয়েছে, সেগুলি যেমন সরাসরি UGC অনুমোদিত তেমনি কোর্সগুলি NEP – এর নিয়ম অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা Affiliated। অর্থাৎ প্রতিটি পরীক্ষার শেষে বি.এ, বি.এস.সি, বি.কম-এর মতো মার্কশিট ও সার্টিফিকেট ইস্যু করবে পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, যা উত্তর ২৪ পরগণা বারাসাতে অবস্থিত ।
B.VOC IN BROADCAST JOURNALISM:
এই তিন বছরের ডিগ্রী কোর্সটির বর্তমানে বিপুল চাহিদা রয়েছে। ২০১৬ সালে প্রথমে এই কোর্সটি রাজারহাটের ডিরোজিও মেমোরিয়াল কলেজে চালু হয়। ব্রডকাস্ট মিডিয়া, ফিল্ম ইণ্ডাষ্ট্রি, রেডিও-টিভি সাংবাদিকতা, অডিও ভিস্যুয়াল বিজ্ঞাপন, ক্যামেরা হ্যান্ডেলিং ও ভিডিও এডিটর প্রভৃতি ক্ষেত্রে যারা নিজের কেরিয়ার গড়ে তুলে সুপ্রতিষ্ঠিত হতে চান, তাদের জন্য সুলভে এই কোর্সে ভর্তি হবার সুযোগ রয়েছে। এমনকি বাংলাদেশ সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকেও বহু ছাত্রছাত্রী প্রতি বছর এই কোর্সে ভর্তি হতে আসে। এই বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের জন্য কলেজে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটানো হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে ব্রডকাস্ট ষ্টুডিও, ষ্টুডিও ফ্লোর, ফটোশুট করার ফ্লোর, প্রোডাকশন কন্ট্রোল রুম, ডাবিং স্টুডিও। এছাড়া রয়েছে ওয়েব স্ট্রিমিং এর সুবিধা, বিভিন্ন ফরম্যাটের ব্রডকাস্ট ও মুভি ক্যামেরা, যথোপযুক্ত লেন্স, ড্রোন ক্যামেরা, অ্যাঙ্কারিং এর জন্য টেলিপ্রম্পটার ইত্যাদি। ব্রডকাস্ট জার্নালিজমে সাংবাদিকতার ধারনা ও পাঠ দেবার পাশাপাশি হাতে-কলমে শেখানো হয় ক্যামেরা হ্যান্ডেলিং ডিজিটাল এডিটিং পোস্ট প্রোডাকশন, সাউন্ড এডিটিং, VFX বা স্পেশাল এফেক্টস ইত্যাদি। এছাড়াও অডিও ভিস্যুয়াল মিডিয়ার জন্য খবর তৈরি করা, তথ্যচিত্র বানানো, ২৪x৭ নিউজ পোর্টালের ওয়েব ডেস্কে কাজ করা, পোর্টালে খবর তৈরি করে পোস্ট করা-তাদের পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত। এই সমস্ত সুযোগ-সুবিধা ও পরিকাঠামোগত সহায়তা কলেজ থেকেই প্রদান করা হয়। তাদের হাতে-কলমে শিক্ষার অঙ্গ হিসেবে বিজ্ঞাপন, কর্পোরেট ফিল্ম, শর্ট ফিল্ম, নির্বাক ও সবাক স্বল্পদৈর্ঘ্যের চিত্র বানাতে হয়। তাদের কাজের কিছু নমুনা মিলবে ডিরোজিও মেমোরিয়াল কলেজের ইউটিউব চ্যানেলে। কোর্সের মধ্যে যেমন ফিল্ড ওয়ার্ক করানো হয়, তেমনি কোর্সের শেষে ইন্টার্নশিপ ও প্লেসমেন্টেরও বন্দোবস্ত রয়েছে। প্রসার ভারতী, ইটিভি ভারত, হাই নিউজ, ২৪ ঘন্টা, সুরিন্দর ফিল্মস, বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল ও ইউটিউব নিউজ চ্যানেলে এখানকার ছাত্র-ছাত্রীরা কাজের সুযোগ পেয়েছে।
- VOC IN PUBLIC RELATIONS:
UGC নতুন করে 2018 সালে NSQF-এর অধীনে যেসব নতুন কোর্সের অনুমোদন দিয়েছে, ডিরোজিও মেমোরিয়াল কলেজকে ভারত সরকারের মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক আরও একটি নতুন কোর্স B. Voc in Public Relations এর অনুমোদন দিয়েছে। সরকারি স্তরে Public Relations বা জনসংযোগ ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট নিয়ে তিনবছরের ডিগ্রী পাঠ্যক্রমে স্নাতক স্তরে পড়ার সুযোগ পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষের আর কোথাও নেই। এই কোর্সে শেখানো হয় মিডিয়া রাইটিং, রিপোর্টি, এডিটিং,কনটেন্ট রাইটিং, বিজ্ঞাপনের কপি রাইটিং, ইভেন্ট মার্কেটিং, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, ইভেন্ট প্লানিং, ক্রাইসিস কমিউনিকেশন, মিডিয়া ইকোনমিক্স, জনসংযোগ, অ্যাড ক্যাম্পেন, কর্পোরেট জনসংযোগ ইত্যাদি। হাতে-কলমে শেখানো হয় ফটোগ্রাফি, ডকুমেন্টারি প্রোডাকশন, কর্পোরেট ফিল্ম তৈরি, VFX, অ্যানিমেশন, ওয়েব ডিজাইন, ডিজিটাল কপি এডিটিং, অডিও ভিস্যুয়াল মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া ও অন্যান্য মাধ্যমের উপযোগী বিজ্ঞাপন তৈরি করার কৌশল, প্রেস রিলিজ রাইটিং ইত্যাদি। মিডিয়া রিসার্চ, মার্কেট , ইভেন্ট প্ল্যানিং ও ম্যানেজমেন্ট-এই কোর্সের প্রতিপাদ্য বিষয়। এই কোর্সের শেষে ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছে। বিড়লা থেকে শুরু করে প্রথম শ্রেণীর অগ্রণী প্রতিষ্ঠানগুলিতে এবং স্টার্ট আপ বিজনেস তৈরি করার ক্ষেত্রে এখান থেকে পাশ করা ছাত্রছাত্রীরা সহজেই তাদের যোগ্যতা ও কৃতিত্ব প্রমাণ করেছে।
- VOC IN PRINTING & BOOK PUBLISHING:
এই তিন বছরের ডিগ্রি কোর্সে প্রিন্টিং টেকনোলজি ও বুক পাবলিশিং-এর মিশেলে এমন এক পাঠক্রম তৈরি করা হয়েছে-যা ভারতের আর কোথাও পড়ানো হয় না। এই ট্রেডে এখনো প্রচুর কাজের সুযোগ রয়েছে। প্রিন্টিং ও পাবলিশিং সেক্টরে স্কিলড বা দক্ষ ও কর্মকুশলী মানুষের অভাব এখনো পরিলক্ষিত হয়। আর আমাদের দেশে প্রিন্টিং টেকনোলজির যত উন্নতি হচ্ছে ততই কাজের যোগান অনুযায়ী Skilled Workforce পাওয়া যাচ্ছে না। এই চাহিদার কথা মাথায় রেখেই প্রিন্টিং ও বুক পাবলিশিং কোর্সে শেখানো হয় গ্রাফিক্স কমিউনিকেশন, বুক প্রিন্টিং ও প্রোডাকশন পদ্ধতি, মার্কেটিং, এডিটিং, প্রুফ চেকিং, কালার রি-প্রোডাকশান, আর্টিস্টিক ম্যানেজমেন্ট, ডিজিটাল প্রি-প্রেস, টাইপোগ্রাফি,কভার ডিজাইনিং, বিভিন্ন প্রিন্টিং পদ্ধতি ইত্যাদি। যারা ভোকেশনাল কোর্সে H.S. পাস করেছেন বা প্রিন্টিং টেকনোলজি নিয়ে ডিপ্লোমা উত্তীর্ণ তাদের গ্রাজুয়েশন করার সুবর্ণ সুযোগ মেলে এই কোর্সের মাধ্যমে। বয়সের কোনো উদ্ধসীমা নেই বলে ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মরত অনেক মানুষজন নেই কোর্সটিতে গত তিন বছর ধরে ভর্তি হয়েছেন। এই কোর্সে পড়াকালীনই ছাত্রছাত্রীরা নামীদামী বিভিন্ন প্রিন্টিং হাউসে কাজ করে এবং নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করে। বিভিন্ন নামীদামী পত্রপত্রিকার প্রকাশনা বিভাগে কাজ করে এখানকার ছাত্রছাত্রীরা।
এই তিনটি বিষয়ে B.Voc বা ব্যাচেলর ডিগ্রি NEP 2020 রীতি মেনে পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পড়ার ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীরা নিয়মমাফিক প্রতিটি সেমিস্টারে পছন্দমত বিষয় নির্বাচনের সুযোগ পায়। Skill Component -এর বিষয়গুলি ছাড়াও তারা বিষয় হিসেবে বাছতে পারে ফটোগ্রাফি, সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন, কমিউনিকেটিভ ইংলিশ, ভিডিওগ্রাফি্, অ্যানিমেশন, একাউন্টিং এন্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি। থিওরি ও হাতে-কলমে শিক্ষার পাশাপাশি রয়েছে Continuous Assessment,- যাতে পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের সবরকম সহায়তা প্রদান করা যায়। তিনটি বি ভোক কোর্সেই মূলত বিভিন্ন মিডিয়া, প্রকাশনা সংস্থা, পাবলিশিং হাউস, জনসংযোগ ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট জগতের দক্ষ মানুষজন ক্লাস নিতে আসেন। ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে যথাযথ পেশাদারী দক্ষ Skilled ছাত্রছাত্রী তৈরি করাই এই কোর্স তিনটির লক্ষ্য। একারণে বিভিন্ন মিডিয়া ও প্রাকাশনী সংস্থা, ক্যালকাটা জার্নালিষ্ট ক্লাব এবং বিভিন্ন নামজাদা জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির সঙ্গে MOU স্বাক্ষরিত হয়েছে । সবকটি কোর্সের শেষেই ইন্টার্নশিপ ও প্লেসমেন্টের সুযোগ রয়েছে। যে কোন বিষয়ে উচ্চ মাধ্যমিক (১০+২) বা সমতুল পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা আবেদন করতে পারেন।বয়সের কোনো উদ্ধসীমা নেই। আবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয়তা যাচাই করে স্কলারশিপের সুযোগ রয়েছে। এই তিনটে কোর্সে অনলাইনে ভর্তি হওয়া যাবে। ভর্তির সময় লাগবে 6520 টাকা। সরাসরি ভর্তি হওয়া যাবে। এই কোর্সগুলির প্রতিটি সেমিষ্টারের কোর্স ফি 6520 টাকা এবং ইউনিভার্সিটি রেজিস্ট্রেশন ফি ও ফর্ম ফিলাপ ফি আলাদা। ভর্তির শেষ তারিখ ৩১ শে আগস্ট, ২০২৫।
অনলাইনে ভর্তি হতে লগ ইন করুন www.dmc.ac.in এ অথবা সরাসরি ভর্তির জন্য লগ ইন করুন https://cmsys.dmcadmission.in/bvoc/-এ। এ ছাড়া কোর্স সম্বন্ধে বিশদে জানতে ও ভর্তি সংক্রান্ত সমস্যা হলে যোগাযোগ করতে পারেন (ছুটির দিন বাদে যেকোনো কাজের দিন সকাল 11 টা থেকে 5 টার মধ্যে) এই নম্বরগুলোতে 9830551774 / 7980088714
ভারত সরকার অনুমোদিত ডিপ্লোমা কোর্স
কমিউনিটি কলেজ স্কিম বা CCS আমেরিকা, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ বা অস্ট্রেলিয়া-র মতো দেশে বহুল প্রচলিত হলেও ভারতে স্কিল ডেভেলপমেন্ট কেন্দ্রিক এক বছরের ডিপ্লোমা কোর্স চালু হয়েছে ২০১৫ সাল থেকে ভারতের কয়েকটি নির্দিষ্ট কলেজে। পশ্চিমবঙ্গের যে কয়েকটি মাত্র কলেজে ভারত সরকার মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনস্থ ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশন অনুমোদিত কলেজ রয়েছে তার মধ্যে ডিরোজিও মেমোরিয়াল কলেজ অন্যতম। ডিরোজিও মেমোরিয়াল কলেজে যে বিষয়ে এক বছরের ডিপ্লোমা কোর্স রয়েছে সেটি হল (১) ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফি। যাদের আর্থিক সামর্থ্য কম, যারা পড়াশোনার পাশাপাশি হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নিতে চান তাদের জন্যই ভারত সরকারের অধীনস্থ ইউজিসি প্রচলন করেছে এই কর্মমুখী শিক্ষার পাঠক্রমের। কলকাতার কাছেই রাজারহাটের ডিরোজিও মেমোরিয়াল কলেজের এই বৃত্তিমুখী ডিপ্লোমা কোর্সটি আবার পশ্চিমবঙ্গের রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত ও ভারত সরকারের অনুমোদন প্রাপ্ত।
ডিপ্লোমা ইন ফটোগ্রাফি এন্ড ভিডিওগ্রাফি:
Nikon, Canon -এর মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ক্যামেরা কোম্পানির পরামর্শে ও ক্যালকাটা জার্নালিস্ট ক্লাবের সহযোগিতায় এবং ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফি শিল্পের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কোর্সটির পাঠক্রম তৈরি করা হয়েছে। কলেজেই সুযোগ মিলবে লাইটও মেক-আপের মেলবন্ধনে ফটোশুট করার উপকরণ। বিভিন্ন ধরনের লাইট সেট আপ, ষ্টুডিও ফ্লোর, ফটোশুটের ব্যাকগ্রাউন্ড, ক্রোম স্টুডিও বিভিন্ন ধরনের DSLR ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা, ষ্টুডিও ক্যামেরা, ফিস আই লেন্সের ক্যামেরা, Go Pro ক্যামেরা, Osmo ক্যামেরা, ড্রোন ক্যামেরা প্রভৃতি কলেজেই পাওয়া যাবে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের জন্য। এছাড়া VFX-এ স্পেশাল ইফেক্ট, অ্যানিমেশনের Basics ও কমিউনিকেটিভ ইংলিশ এ কোর্সের পাঠ্যক্রমভুক্ত। Adobe Premiere ও Final Cut Pro X (FCPX) এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে শেখানো হবে ভিডিও এডিটিং। সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বা সাউন্ড এডিটিং-এর প্রাথমিক পর্ব শেখানোর জন্য রয়েছে ডাবিং স্টুডিও, যেখানে Avid-এর Pro Tools -সফট্ওয়ারে শেখানো হবে সাউন্ড এডিটিং। এই কোর্সর মধ্যেই থাকছে Film Apprreciation,-যা শেখানো হবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রূপকলা কেন্দ্র ও সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের অভিজ্ঞ অধ্যাপকদের মাধ্যমে। সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন ক্লাস হয়। কোর্স শেষে রয়েছে ক্যাম্পাসিং, ইন্টার্নশিপ ও প্লেসমেন্ট সহায়তা। এবছরও ETV Bharat, Hi-News, Bangla Times, সুরিন্দর ফিল্মস-এ ছাত্রছাত্রীরা চাকরির সুযোগ পেয়েছে। এছাড়া নামিদামি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনলাইন পোর্টালে প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফার হিসেবেও অনেকে জীবিকা অর্জন করেছে। ওয়েডিং ফটোগ্রাফি, ওয়েডিং ভিডিও, প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফি, স্ট্রিট ফটোগ্রাফি, মিউজিক ভিডিও, ভিডিও ডকুমেন্টারী, ডকু-ফিচার, পোর্টফোলিও তৈরি প্রভৃতি নানা ধরনের ফটোগ্রাফি ও ভিডিও প্রোডাকশনে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ মিলবে এই জগতের নামীদামী মানুষদের কাছ থেকে। এছাড়া থাকবে Canon ও Nikon -এর বিভিন্ন ফটোগ্রাফি ওয়ার্কশপে বিনামূল্যে অংশগ্রহণের সুযোগ।
ডিপ্লোমা ইন ওয়েব ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট:
এই কোর্সটিতে ছাত্রছাত্রীদের ওয়েব ডিজাইন সম্বন্ধে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও ওয়েব ডিজাইনিংএর পুঙ্খানুপুঙ্খ শিক্ষা দেওয়া হয়। এই কোর্সের সঙ্গে যুক্ত আছে বিভিন্ন ওয়েব ডিজাইন কোম্পানির থেকে আসা শিক্ষক-শিক্ষিকারা যারা তাদের পূর্ন সহায়তায় ছাত্রছাত্রীদের এই নতুন প্রযুক্তির শিক্ষায় আলোকিত করেছেন। নেটওয়ার্ক টেকনোলজি, ওয়েব পেজ ডিজাইনের বেসিকস ,সিকুইরিটি প্রোগ্রামিং, ওয়েব ডিজাইনিং ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, কোডিং প্রাকটিস প্রভৃতি এই কোর্সের অন্তর্ভুক্ত। এই কোর্সের সফল ছাত্রছাত্রীরা বর্তমানে TCS,Cognizant, সফলতার সঙ্গে Tire5 এর মতো বহু আই টি কোম্পানিতে কাজ করছে।
কোর্সের শেষে পরীক্ষা সংঘটিত করবে পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় সেক্টর স্কিল কাউন্সিল বা Skill Accessory Body-র সহযোগিতায়। সফলতা পেলে পাওয়া যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কশিট। ভর্তি হতে প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে গেলে সত্বর লগ ইন করুন www.dmc.ac.in । ভর্তির সময় অনলাইনে অ্যাপ্লিকেশন ফি সহ ৫০৫০ টাকা জমা দিতে হবে। মোট আসন সংখ্যা ৫০ টি । মোট বার্ষিক হারে কোর্স ফি 10000 টাকা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রেশন ফি ও ফর্ম ফিলাপ বাবদ 500 টাকা জমা দিতে হবে। এছাড়া কোর্স সম্বন্ধে বিশদে জানতে ও ভর্তি সংক্রান্ত সমস্যা হলে যোগাযোগ করতে পারেন ( ছুটির দিন বাদে যেকোনো কাজের দিনে সকাল ১১ টা থেকে ৫ টার মধ্যে এই নম্বর গুলিতে 9830551774 / 7980088714। ভর্তির শেষ তারিখ ৩১ শে আগস্ট, ২০২৫।
