সোনারপুরঃ সোনারপুর মহাবিদ্যালয়কে ঘিরে একের পর এক বিতর্কিত ঘটনা সামনে আসায় ক্রমেই চড়ছে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের পক্ষ থেকে এক সাংবাদিক সম্মেলনে একাধিক চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ্যে আনা হয়, যেখানে কলেজ চত্বরে অশ্লীল আচরণ, মাদক সেবন এবং রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তুলেছে বামেরা।
আরও পড়ুনঃ ডায়মন্ড হারবারে হুগলি নদীতে ঝাঁপ, তলিয়ে গেলেন মহিলা – তল্লাশি অভিযান শুরু
একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কলেজের ইউনিয়ন রুমের ভিতরে এক ছাত্র প্রকাশ্যে এক ছাত্রীকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করছে। সিপিএম দাবি করেছে, অভিযুক্ত যুবক একজন তৃণমূল ঘনিষ্ঠ ছাত্র নেতা এবং ভুক্তভোগী ছাত্রী ওই কলেজেরই ছাত্রী। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কলেজ ক্যাম্পাসেই কয়েকজন পড়ুয়া প্রকাশ্যে গাঁজা খাচ্ছে। শুধু তাই নয়, তৃণমূল ঘনিষ্ঠ কয়েকজন নেতাকে কলেজের ইউনিয়ন রুমে বসে থাকতে দেখা যায় বলে ভিডিও প্রমাণ সহ অভিযোগ এনেছে সিপিএম। সিপিএমের অভিযোগ, কলেজটি এখন আর শিক্ষার মন্দির নেই। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় একের পর এক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে চলেছে। এবং এর পেছনে মূল মদত রয়েছে কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা এলাকার বিধায়ক লাভলী মৈত্রর, এমনই দাবি বাম নেতৃত্বের। প্রসঙ্গত, দু’দিন আগেই একটি ভিডিও ভাইরাল হয় যেখানে দেখা যায়, ইউনিয়ন রুমে এক যুবনেতা এক ছাত্রীকে দিয়ে মাথা টিপিয়ে নিচ্ছে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন ভিডিওগুলি প্রকাশ্যে আসায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
এই পরিস্থিতিতে এবার মুখ খুললেন সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক লাভলী মৈত্র। তিনি বলেন, “কলেজে যদি কোনও অন্যায় হয়ে থাকে, তা তদন্ত করে দেখা হবে। বহিরাগতদের প্রবেশ ইতিমধ্যেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কলেজ চত্বরে শুধুমাত্র ছাত্রছাত্রীদেরই প্রবেশাধিকার থাকবে।” রাজন্যা হালদার ও কাউন্সিলর পাপিয়া হালদারের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে লাভলী মৈত্র বলেন, ‘‘ওরা কী বলেছে আমি জানি না। তবে রাজন্যা হালদারের কথার কোনও ভিত্তি নেই। ওর অনেক ছবি তো সোশাল মিডিয়ায় ঘুরছে এখন।’’ তিনি আরও বলেন, “আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। অন্যায় হলে কখনও মদত দিই না। দলই আমাদের মূল ভরসা, নেত্রীর আদর্শই পথ।” তবে এই বক্তব্য ঘিরেও শুরু হয়েছে নতুন করে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিরোধীদের একাংশের মতে, লাভলী মৈত্র আসলে তাঁর ঘনিষ্ঠদের আড়াল করার চেষ্টা করছেন। যদিও তাঁর জবাব, ‘‘তদন্তেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’ সোনারপুর কলেজ এখন রাজ্যের রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। কী বলবে তদন্ত, সেটাই এখন দেখার।
