বারুইপুরঃ দারিদ্র্যের করুণ চিত্র আরও একবার সামনে এল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর স্টেশন চত্বরে। শনিবার সন্ধ্যায় সেখানে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন এক বৃদ্ধ দম্পতি—সন্ন্যাসী কর্মকার (৭০) ও তাঁর স্ত্রী ঝর্ণা কর্মকার (৬৫)।
আরও পড়ুনঃ ২১ জুলাই শহীদ দিবসের প্রস্তুতি সভায় বিরোধী শিবিরে ধস, আইএসএফ ব্লক সভাপতি সহ ৩৪ জন তৃণমূলে যোগদান
স্থানীয়দের নজরে আসতেই খবর যায় জিআরপির কাছে। পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে দ্রুত বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসায় সন্ন্যাসী কর্মকার কিছুটা সুস্থ হলেও, তাঁর স্ত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। হাসপাতালে শয্যাশায়ী সন্ন্যাসী কর্মকার জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি ডায়মন্ড হারবারে। সন্তান নেই, পরিবারে কেউ নেই বললেই চলে। একসময় একটি ফ্যান তৈরির কারখানায় কাজ করতেন তিনি। তবে করোনা ও লকডাউনের ধাক্কায় সেই কাজ চলে যায়। এরপর থেকেই শুরু হয় জীবনের দুর্বিষহ লড়াই। সন্ন্যাসীর কথায়, “টাকার অভাবে প্রায় দিন খেতে পারতাম না। অনেক চেষ্টা করেও কোনও কাজ পাইনি। অসহ্য অবস্থার মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম। তখনই ভাবি, আর না… বাঁচা যাবে না। তাই দুজনে একসঙ্গে শেষ করার সিদ্ধান্ত নিই।” শনিবার সকালে ট্রেনে চেপে বারুইপুর আসেন তাঁরা। স্টেশনের চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে সারাদিন কাটিয়ে সন্ধ্যায় বিষ কিনে খান। পরে আবার প্ল্যাটফর্মে ফিরে এলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। যাত্রীরা তাঁদের পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন।
এই করুণ ঘটনার জেরে ফের প্রশ্ন উঠেছে—প্রান্তিক মানুষদের জন্য ঠিক কতটা সুরক্ষা আছে আমাদের সমাজে? মানবিক সহায়তার অভাবে একের পর এক মানুষ কেন এই চরম পথ বেছে নিচ্ছেন, তার উত্তর খুঁজছে গোটা সমাজ।
