নিজস্ব প্রতিবেদনঃ পুরী, ওড়িশা – ভারতের অন্যতম বৃহৎ ও প্রাচীন ধর্মীয় উৎসব জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উপলক্ষে পুরী শহরে এখন উৎসবমুখর পরিবেশ। প্রতিবছরের মতো এবারও আষাঢ় মাসের শুক্ল পক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে (রথযাত্রার দিন) তিন ভাই–বোন, জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাকে বিশাল কাঠের রথে চড়িয়ে গুণ্ডিচা মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হবে। তার আগে চলছে জোরকদমে প্রস্তুতির কাজ।
রথ তৈরির কাজ পুরোদমে
তিনটি বিশাল রথ – নন্দীঘোষ (জগন্নাথের), তালধ্বজ (বলরামের) ও দর্পদলন (সুভদ্রার) – তৈরি হচ্ছে পুরীর গ্র্যান্ড রোডের ধারেই। দক্ষ কারিগরদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই ঐতিহ্যবাহী কাজে যুক্ত। প্রায় ১,২০০ ঘনফুট কাঠ, ৮০টি চাকা, রঙিন কাপড়, ঝালর, পতাকা ও ধ্বজপতাকায় সাজানো হচ্ছে প্রতিটি রথ। পুরীর শ্রীজগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ রথ নির্মাণের প্রতিটি ধাপে নজর রাখছে।
নিরাপত্তায় কড়াকড়ি
ভিড় সামাল দিতে ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ওড়িশা পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী মিলিয়ে হাজার হাজার নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন থাকবে। বসানো হচ্ছে ড্রোন নজরদারি ও সিসিটিভি ক্যামেরা। ভিড় নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
ভক্তদের ঢল
ভারত ও বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ ভক্ত ইতিমধ্যে পুরীতে এসে পৌঁছেছেন। হোটেল, লজ, ধর্মশালায় ভিড় উপচে পড়ছে। রাস্তার দুপাশে প্যান্ডেল, প্রসাদ বিতরণ কেন্দ্র, এবং মেডিকেল ক্যাম্প তৈরি হয়েছে। পুরী মিউনিসিপ্যালিটি এবং স্থানীয় প্রশাসন শহরের সৌন্দর্যবর্ধন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে চব্বিশ ঘণ্টা কাজ করছে।
পুরীর রথযাত্রা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি ভক্তি, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির এক মহামিলন ক্ষেত্র। দেবতাদের রথে চড়িয়ে গুণ্ডিচা মন্দিরে যাওয়া এবং নয়দিন পরে ফিরে আসা – এই প্রতীকী যাত্রার মধ্যেই নিহিত রয়েছে এক অপার আধ্যাত্মিকতা। সমস্ত প্রস্তুতি শেষ হলেই রথের দড়ি টানতে নামবেন হাজার হাজার ভক্ত – তখনই সত্যিকার অর্থে শুরু হবে পুরীর রথযাত্রার মহোৎসব।
