
কুলতলিঃ লোকালয়ে ঢুকে পড়েছিল বাঘ। আতঙ্কে কাঁপছিল কুলতুলির একটি গ্রামের মানুষ। তখনই ভয়কে জয় করে সামনে এগিয়ে এসেছিলেন গ্রামেরই গনেশ শ্যামল। বাঘকে তাড়িয়ে মানুষকে রক্ষা করলেও নিজে রক্ষা পাননি। গত ১০ই ফেব্রুয়ারি বাঘের হামলায় গুরুতর আহত হন তিনি।
আরও পড়ুনঃ দেউলবাড়িতে অবশেষে খাঁচাবন্দি হল বাঘ, স্বস্তিতে গ্রামবাসী
বাঘের একাধিক থাবা ও কামড়ে ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়ে তাঁর শরীর। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, তাঁর একটি চোখ প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে, আর একটি হাতের শক্তিও এখন অনেকটাই কমে গিয়েছে। প্রতিদিনের কাজ তো দূরের কথা, এখন নিজেই নিজের দেখভাল করতে পারছেন না ঠিকভাবে। গনেশ শ্যামলের পরিবারে আছেন স্ত্রী ও তিন কন্যা। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনিই। বর্তমানে সেই উপার্জন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম সংকটে পড়েছে গোটা পরিবার। বন দপ্তরের পক্ষ থেকে কিছু আর্থিক সাহায্য মিলেছে ঠিকই, তবে তা চিকিৎসা এবং সংসারের খরচ চালাতে নিতান্তই অপ্রতুল। গনেশ বাবুর দাবি, “আমি প্রাণ দিয়ে গ্রামের মানুষকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি। সরকার যদি কোনও স্থায়ী চাকরি বা সুরাহার ব্যবস্থা না করে, তাহলে আমার মেয়েদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।”
এই ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা গনেশ শ্যামলের সাহসিকতার প্রশংসা করলেও প্রশাসনের তরফে দীর্ঘমেয়াদি কোনও সাহায্য এখনও পর্যন্ত মেলেনি। আজও দুর্বল শরীর নিয়ে লড়াই করছেন তিনি — শুধু নিজের জন্য নয়, পরিবারের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য। এখন প্রশ্ন একটাই — “বাঘের হাত থেকে যারা মানুষকে রক্ষা করেন, বিপদের সময় কে রক্ষা করবে তাঁদের?”