
সোনারপুরঃ সোনারপুর মোড়ের ধারে ধারে হঠাৎই কানে আসে এক হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া আহ্বান—
“আসুন, এক গ্লাস জল খেয়ে যান…”
গরমে তপ্ত দুপুর, মাথার উপর রোদের প্রখরতা চরমে। শরীর ঘামছে, মন ক্লান্ত। ঠিক তখনই এই ডাক যেন এক মুহূর্তের প্রশান্তি এনে দেয়। সেদিকে এগিয়ে গেলে দেখা মিলবে কয়েকজন যুবক বা কর্মী, হাতে এক গ্লাস ঠান্ডা জল আর সঙ্গে সামান্য গুড় বাতাসা। তারা বলবে— “এ নিন, একটু জল খেয়ে নিন, তবেই তো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।”
এই মহান উদ্যোগের পেছনে রয়েছে বাঘাযতীন শাখা সংঘের সোনারপুর শাখার কর্মীরা। মে মাসের এই প্রচণ্ড গরমে যারা রাস্তায় বেরিয়েছেন, তাঁদের একটু স্বস্তি দেওয়ার লক্ষ্যে এই ‘জলদান’ কর্মসূচি শুরু করেছেন তাঁরা। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের হাতেই তাঁরা তুলে দিচ্ছেন পানীয় জলের গ্লাস, সঙ্গে গুড় বাতাসা। এই উদ্যোগ নতুন নয়। গত চার বছর ধরে এই মহৎ কাজে নিজেদের যুক্ত রেখেছেন তাঁরা। এবছরও ৪ঠা মে থেকে শুরু হয়েছে এই শিবির, যা চলবে আগামী ২৫শে মে পর্যন্ত। পথচারি থেকে শুরু করে রিকশাওয়ালা, ভ্যানচালক বা দোকানদার— সকলেই পাচ্ছেন এই সেবা।
এই কর্মসূচির পেছনে রয়েছে এক গভীর আধ্যাত্মিক ভিত্তি। বাঘাযতীন শাখা সংঘের কর্মীরা সকলেই শ্রী শ্রী মত দুর্গাপ্রসন্ন পরমহংস দেবের শিষ্য। গুরুর নির্দেশেই তাঁরা এই সেবামূলক কাজ করে চলেছেন। তাঁদের মতে, মানুষের সেবা মানেই ঈশ্বরের সেবা। গরমে তৃষ্ণার্ত একজন পথচারীর হাতে এক গ্লাস জল তুলে দেওয়াও হতে পারে এক পরম পূণ্যকর্ম। এই মানবিক উদ্যোগ আমাদের মনে করিয়ে দেয়— সমাজের প্রতি আমাদেরও কিছু দায়িত্ব আছে। আমরা যদি সকলেই একটু করে এগিয়ে আসি, তবে এই পৃথিবী আরও সুন্দর হয়ে উঠতে বাধ্য। সোনারপুরে তাই আজও ভেসে আসে সেই ডাক —
“আসুন, এক গ্লাস জল খেয়ে যান…”