
নরেন্দ্রপুরঃ নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন আবারও প্রমাণ করল তাদের পড়াশোনার সুনাম শুধুই কথার কথা নয়—বরং কঠোর শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা এবং নিষ্ঠার ফল। চলতি বছর উচ্চমাধ্যমিকে রাজ্যের প্রথম দশে জায়গা করে নিয়েছে মিশনের চার কৃতি ছাত্র। অদ্রীজ গুপ্ত এবং রফিদ রানা লস্কর অষ্টম স্থান, এবং যমজ ভাই অনীক বাড়ুই ও অনীশ বাড়ুই নবম স্থান অর্জন করেছে। আশ্চর্যজনকভাবে, এই চারজনেই মাধ্যমিকেও প্রথম দশে ছিল।
আরও পড়ুনঃ উচ্চমাধ্যমিকে পঞ্চম, ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন সোনারপুরের তন্ময়ের
বিশেষভাবে নজর কেড়েছে যমজ ভাই অনীক ও অনীশের একসঙ্গে নবম স্থানে উঠে আসা। তারা জানিয়েছে, ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে তাদের। ছোটবেলায় দাদুর অসুস্থতায় চিকিৎসকের অক্ষমতা থেকেই এই ইচ্ছার জন্ম। অনীক-অনীশের সাফল্যের পেছনে রয়েছে পরিবারের অশেষ অবদান। মা-বাবা দুজনেই শিক্ষক, এবং তাঁদের নিয়মিত সহায়তা এই সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি। অষ্টম স্থানাধিকারী অদ্রীজ গুপ্ত পেয়েছে ৪৯০ নম্বর। তার বক্তব্যে ধরা পড়ে প্রত্যাশার থেকেও ভালো রেজাল্ট হতে পারত। পড়াশোনার পাশাপাশি বন্ধুদের সঙ্গে বিচ্ছেদ নিয়ে কিছুটা মনখারাপের সুরও শোনা গেছে তার গলায়। তবে ভবিষ্যতের লক্ষ্যে সে একেবারে স্থির—চিকিৎসক হওয়াই তার একমাত্র স্বপ্ন। রফিদ রানা লস্করের সাফল্যের যাত্রা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমদিকে সে নরেন্দ্রপুর মিশনের অনুশাসন মানতে না চাইলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে যেমন মিশনকে ভালোবেসেছে, তেমনি মিশনও তাকে আগলে রেখেছে। তার বক্তব্যে মিশনের শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ পেয়েছে।
নরেন্দ্রপুর মিশনের প্রধান শিক্ষক স্বামী ইস্টেশানন্দ জানিয়েছেন, ধারাবাহিক সাফল্যের অন্যতম কারণ হল ছাত্রদের মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা। একনিষ্ঠ পড়াশোনা, নিয়মতান্ত্রিক জীবন এবং শিক্ষক-অভিভাবকদের সহায়তাতেই এই অসাধারণ ফলাফল সম্ভব হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। এবছর মোট ১০০ জন ছাত্র উচ্চমাধ্যমিকে পরীক্ষায় বসেছিল মিশনের তরফে। তাদের মধ্যে এই চারজনের রাজ্যসেরা হয়ে ওঠা গোটা প্রতিষ্ঠানের জন্যই গর্বের। ভবিষ্যতের ডাক্তার হয়ে সমাজের সেবা করতে চাওয়া এই কিশোরদের স্বপ্ন সফল হোক, এটাই সবার কাম্য।