সোনারপুরঃ আজকের ডিজিটাল যুগে সহজে ও দ্রুত লোন পাওয়ার প্রলোভনে এক তরুণী চরম হয়রানির শিকার হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থানার অন্তর্গত সুভাসগ্রাম এলাকায়। অভিযোগ, অনলাইনে লোনের জন্য আবেদন করার কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় ব্ল্যাকমেলের চক্রান্ত। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুভাসগ্রামের বাসিন্দা এক তরুণী সদ্য একটি ছোট ব্যবসা শুরু করেছেন। সেই ব্যবসার জন্যই তাঁর কিছু আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন ছিল। অনলাইনেই একটি লোন অ্যাপের বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করেন তিনি। প্রথমে সব কিছুই স্বাভাবিক মনে হলেও, কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর মোবাইলে একের পর এক ফোন ও মেসেজ আসতে থাকে।
অভিযোগ, এক অজ্ঞাত নম্বর থেকে তাঁকে বলা হয়, তিনি লোনের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন এবং তাৎক্ষণিক লোন দেওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা আগাম দিতে হবে। কিন্তু ওই তরুণী টাকা দিতে অস্বীকার করলে পরিস্থিতি মোড় নেয় ভয়ঙ্কর দিকে। তিনি জানান, হুমকি দিয়ে বলা হয়, তাঁর মোবাইল থেকে সংগ্রহ করা ব্যক্তিগত তথ্য ও ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এমনকি, তাঁর পরিবারের সদস্যদের ফোন নম্বরেও মেসেজ পাঠিয়ে মানসিক চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে ওই তরুণী অবশেষে সাহস করে সোনারপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ওই অ্যাপ ও সংশ্লিষ্ট নম্বরগুলোর প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এদিকে, এই ঘটনায় স্থানীয় মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, কীভাবে এত সহজে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য অ্যাকসেস করা সম্ভব হচ্ছে।
সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতে, বহু অনলাইন লোন অ্যাপ থাকে যেগুলি বৈধ নয়। এই ধরনের অ্যাপ ফোনে ইন্সটল করার সময় ব্যবহারকারীর কনট্যাক্ট, ফটো, মেসেজের মতো নানা তথ্যের অ্যাকসেস চেয়ে নেয়, যা পরে চাপে ফেলার কাজে ব্যবহৃত হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে, যেকোনো অনলাইন অ্যাপে ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়ার আগে অবশ্যই তার বৈধতা যাচাই করে নিতে। সেই সঙ্গে অচেনা নম্বর থেকে আসা মেসেজ বা ফোন কলের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
