
গড়িয়াঃ রক্তদানের মতো মানবিক কাজকে সামনে রেখেই রবিবার বালিয়া বৈশাখী সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত হল এক বিশেষ রক্তদান শিবির। রক্তের ঘাটতি মেটাতে আয়োজিত এই শিবিরে যেমন স্থানীয় বাসিন্দারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন, তেমনই নজর কাড়ে এক ব্যতিক্রমী দৃশ্য—এক মা তাঁর ছেলেকে নিয়ে রক্তদান করতে এসেছেন, ছেলেকে জানাতে চান এই মহান কাজের গুরুত্ব। বালিয়া এলাকার বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা কয়াল, পেশায় এক স্কুল শিক্ষিকা, উপস্থিত হন তাঁর দশ বছরের ছেলে আইনেশ দাসকে নিয়ে। আইনেশ সাউখ পয়েন্ট স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। প্রিয়াঙ্কা নিজে রক্ত দেন, আর পাশেই খাটে বসে সেই দৃশ্য দেখে ছোট্ট আইনেশ। এই ছিল তার জীবনের প্রথম রক্তদান শিবিরে অংশগ্রহণ। রক্তদানের গুরুত্ব, তার উপকারিতা ও সামাজিক প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ছেলেকে অবহিত করেন মা।
আরও পড়ুনঃ বালিয়া বৈশাখী সংঘের উদ্যোগে সফল রক্তদান শিবির, প্রশংসায় পঞ্চমুখ জনপ্রতিনিধিরা
প্রিয়াঙ্কার মতে, “ছোট থেকেই যদি ও বুঝতে পারে রক্তদানের প্রয়োজনীয়তা, তাহলে বড় হলে নিঃসন্দেহে সমাজের কাজে লাগবে। শুধু বইয়ের পাঠ নয়, জীবনের শিক্ষাও জরুরি।” রক্তদানে ইচ্ছুক হলেও বয়সের সীমা সম্পর্কে আইনেশকে জানানো হয়—১৮ বছর বয়স না হলে রক্তদান করা যায় না। তবে ভবিষ্যতে রক্তদানের ইচ্ছা প্রকাশ করে ছোট্ট আইনেশ। এই ঘটনার প্রশংসা করেন উপস্থিত অন্যান্য সদস্যরাও। কেউ বলেন, “মা হিসেবে প্রিয়াঙ্কা যেমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তেমনই ভবিষ্যতের জন্য একটি সুন্দর বার্তাও দিয়েছেন—রক্তদান শুধু দায়িত্ব নয়, এক মানবিক চেতনা।” শিবিরে মহিলাদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। এই ধরনের উদ্যোগ যে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের বার্তা দেয়, তা বলাই বাহুল্য।
প্রিয়াঙ্কা ও আইনেশের এই মুহূর্তটি যেন প্রমাণ করে দিল—মানবিকতা শেখানো যায়, যদি সে শিক্ষা হয় হৃদয় থেকে। আর সেই শিক্ষা দিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিতে পারেন মা-বাবারাই। এই দৃশ্য নিঃসন্দেহে বালিয়া রক্তদান শিবিরের অন্যতম স্মরণীয় অংশ হয়ে থাকবে।