
সোনারপুরঃ জীবনের শেষ পর্বে এসে অনেক বয়স্ক মানুষই সমাজ ও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। বয়সজনিত সমস্যা, চলাফেরার অসুবিধা কিংবা মনোবল হারিয়ে তারা প্রায় ঘরবন্দী জীবন কাটাতে বাধ্য হন। ঠিক সেইখানেই আলোর দিশা দেখালেন সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সুমন হালদার। সুমন হালদারের উদ্যোগে এবারও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আয়োজন করা হল মায়াপুর ভ্রমণের। মূলত সোনারপুর এলাকার ৫০ জনেরও বেশি বয়স্ক নারী ও পুরুষ এই যাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। বুধবার রাতে একটি বাসে করে মোট ৬৭ জন যাত্রী রওনা দেন মায়াপুরের উদ্দেশ্যে।
আরও পড়ুনঃ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে করুণ মৃত্যু, শোকের ছায়া ছাপনামারিতে
বৃহস্পতিবার সকালে তারা মায়াপুর পৌঁছে যান। সকালের টিফিন সেরে স্থানীয় এলাকায় সামান্য ঘোরাঘুরির পর তারা মন্দির দর্শনে যান। মন্দিরেই আয়োজন করা হয়েছিল দুপুরের ভোগের। অনেকেই গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণের আনন্দ উপভোগ করেন, কেউ কেউ আবার গঙ্গা পেরিয়ে নবদ্বীপ ধামও ঘুরে আসেন। রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করে তারা আবার সোনারপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন এবং শুক্রবার সকালের মধ্যেই সকলে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যান। এই বিশেষ উদ্যোগ শুধু ভ্রমণ নয়, বয়স্কদের জন্য এটি ছিল এক নিঃশ্বাসে মুক্তি পাওয়ার সুযোগ। দীর্ঘদিন পর এমন ভ্রমণে অংশ নিয়ে সকলেই আপ্লুত। অনেকেই জানিয়েছেন, এতদিন পর বাইরে বেরিয়ে প্রকৃতির কাছাকাছি গিয়ে তারা যেন নতুন করে বাঁচার স্বাদ পেলেন।
এই যাত্রার পরিপ্রেক্ষিতে সুমন হালদার জানিয়েছেন, “আমি চাই এই উদ্যোগটা প্রতি বছর হোক। এই মানুষগুলো সারাজীবন আমাদের জন্য কাজ করেছেন, এখন সময় এসেছে তাদের একটু আনন্দ দেওয়ার।” এই উদ্যোগের জন্য এলাকাবাসীর তরফে সুমনকে কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা জানানো হয়েছে। একাকীত্ব আর বন্দীদশা থেকে বেরিয়ে এসে বয়স্কদের মুখে যে হাসি ফুটেছে, তা নিঃসন্দেহে সমাজে মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল।