সোনারপুরঃ সোনারপুর স্টেশনের কাছে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। মোবাইলে কথা বলতে বলতে রেললাইন পার হওয়ার সময় ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হলেন এক গৃহবধূ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত গৃহবধূর নাম সঙ্গীতা তাঁতি। সোনারপুরের বাসিন্দা তিনি। মঙ্গলবার সকালে তিনি মেয়েকে স্কুলে দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় মোবাইলে কথা বলতে বলতে রেললাইন পার হচ্ছিলেন তিনি। ট্রেনের চালক বারবার হর্ন বাজালেও তিনি শুনতে পাননি বলে জানা গিয়েছে। তার অসচেতনতার ফলেই ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ট্রেনের ধাক্কায় তিনি লাইন থেকে ছিটকে পড়েন এবং তার মাথায় গুরুতর চোট লাগে।
আরও পড়ুনঃ শ্রীপুর সম্মিলনী ক্লাবের অনুষ্ঠান ভবনের উদ্বোধন, এবার থেকে ভাড়ায় মিলবে
দুর্ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে অবস্থার অবনতি হওয়ায় বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু তার অবস্থার আরও অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে রেফার করেন। বর্তমানে তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই ঘটনা ফের একবার ট্রেন লাইন পারাপারের সময় মোবাইল ব্যবহারের ঝুঁকির দিকটি সামনে আনল। রেল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরেই নাগরিকদের সতর্ক করছে যে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে লাইন পার না হতে। এমনকি স্টেশনে নানা জায়গায় সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিও লাগানো রয়েছে। কিন্তু তারপরও বহু মানুষ নিয়ম না মেনে অসতর্কভাবে রেললাইন পার হন, যার ফলশ্রুতিতে ঘটে যায় একের পর এক দুর্ঘটনা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, প্রায়ই দেখা যায় অনেকে কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে বা মোবাইলে কথা বলতে বলতে রেললাইন পার হন। এতে তারা ট্রেনের আওয়াজ শুনতে পান না এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হয়। ট্রেন চালকেরা যতই হর্ন বাজান, অনেক সময় তাতেও কাজ হয় না। ফলে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে প্রশাসন ও রেল কর্তৃপক্ষের আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন অনেকে। সচেতনতার পাশাপাশি আইন লঙ্ঘন করলে জরিমানার বিধান কার্যকর করলে হয়তো মানুষ আরও সতর্ক হবেন। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সঙ্গীতা তাঁতির অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক। তার সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তার পরিবার ও আত্মীয়রা চরম উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা যেন আর কারও জীবনে না ঘটে, সেজন্য রেললাইন পারাপারের সময় সকলকেই আরও বেশি সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
