
সোনারপুরঃ নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার খেয়াদহ ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের চামুরহাটে ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা। পুকুরে পড়ে জলে ডুবে মৃত্যু হল মাত্র আট বছরের এক নাবালিকার। মৃত শিশুটির নাম তৃষা সরদার। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে। পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তৃষার বাবা বিপুল কৃষ্ণ সরদার পেশায় একজন সাধারণ কর্মী। তিনি নদীয়া থেকে বছর খানেক আগে এই এলাকায় জায়গা কিনে বাড়ি তৈরি করেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এখানেই বসবাস করছিলেন। বাড়ির কাছেই ছিল একটি জলাশয়। শুক্রবার বিকেলে তৃষা তার ভাইয়ের সঙ্গে খেলছিল। খেলার ছলে সে হাত-পা ধোয়ার জন্য জলাশয়ের ধারে যায়। সে সময় হঠাৎ তার জুতো পুকুরে পড়ে যায়। ছোট্ট তৃষা জুতোটি তুলতে গিয়ে ভারসাম্য হারিয়ে পুকুরে পড়ে যায়। আশপাশে কেউ না থাকায় সে জলে তলিয়ে যেতে থাকে।
আরও পড়ুনঃমানসিক অবসাদে আত্মঘাতী যুবক, সোনারপুরে শোকের ছায়া
পরিবারের লোকজন কিছুক্ষণ পর খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পুকুরের জলে নেমে তৃষাকে উদ্ধার করা হয় এবং দ্রুত ই.এম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই দুর্ঘটনার পর নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। তৃষার বাবা-মা ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তৃষার মৃত্যু নিছকই দুর্ঘটনা, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, অসতর্কতার কারণেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। তৃষার অকালমৃত্যুতে তার পরিবার ভেঙে পড়েছে। মা-বাবা শোকে কাতর। প্রতিবেশীরাও মর্মাহত। পরিবারের সদস্যরা বারবারই বলছেন, “আমাদের ছোট্ট মেয়েটা আর নেই, এটা আমরা মেনে নিতে পারছি না।” এলাকার মানুষজন এই ঘটনায় অত্যন্ত দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, পুকুরের চারপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কড়া করা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।
এই দুর্ঘটনা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, জলাশয় ও পুকুরের আশপাশে শিশুদের একা ছাড়ার ক্ষেত্রে সচেতনতা কতটা জরুরি। শিশুদের দিকে সর্বদা নজর রাখা এবং জলাশয়ের চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতে এমন মর্মান্তিক ঘটনা না ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন এই দুর্ঘটনার পর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছে। তবে এই ঘটনায় চামুরহাট এলাকায় এক গভীর শোকের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।