
সোনারপুরঃ সোশ্যাল মিডিয়ায় বহুজাতিক সংস্থার নাম করে পার্ট টাইম কাজের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার শিকার হলেন সোনারপুরের এক কলেজ ছাত্রী। এই প্রতারণার ফাঁদে পড়ে তিনি প্রায় ৭০ হাজার টাকা খুইয়েছেন। প্রতারিত হওয়ার পরই তিনি সোনারপুর থানায় এবং সাইবার ক্রাইম শাখায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনারপুর থানার কামরাবাদ এলাকার বাসিন্দা নন্দিনী সেন নামে ওই ছাত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিজ্ঞাপন দেখেন, যেখানে বলা হয়েছিল যে, বাড়ি বসেই পার্ট টাইম কাজ করে মোটা টাকা উপার্জন করা সম্ভব। কাজের মূল বিষয়বস্তু ছিল একটি বহুজাতিক সংস্থার বিভিন্ন প্রোডাক্ট অনলাইনে প্রচার ও বিক্রি করা।
নন্দিনী ওই অফার পেয়ে কাজ শুরু করেন। প্রতারণার প্রথম ধাপে তিনি দেখতে পান, প্ল্যাটফর্মে প্রতিদিন কাজ করার বিনিময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেখানো হচ্ছে, যা তিনি উপার্জন করছেন বলে বিশ্বাস করেন। কিন্তু সেই উপার্জিত অর্থ পেতে হলে কর (ট্যাক্স) বাবদ কিছু টাকা জমা দিতে হবে বলে তাঁকে জানানো হয়। প্রথম দিকে সন্দেহ না করেই নন্দিনী প্রতারকদের দেওয়া ইউপিআই নম্বরে টাকা পাঠাতে থাকেন। একাধিকবার টাকা পাঠানোর পরেও তাঁর একাউন্টে কোনও অর্থ ফেরত আসেনি। এরপর তিনি বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ মায়ের সঙ্গে কথা বলায় আক্রান্ত মেয়ে, বৌদির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
প্রথমে তিনি নিজে প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন, কিন্তু তখনই তিনি দেখতে পান, প্রতারকরা তাঁদের সমস্ত যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে। এরপরই তিনি সোনারপুর থানায় গিয়ে বিস্তারিত অভিযোগ দায়ের করেন। নন্দিনীর অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এটি একটি সুসংগঠিত সাইবার প্রতারক দলের কাজ, যারা সাধারণ মানুষকে লোভনীয় চাকরির অফার দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করছে।
এই বিষয়ে সাধারণ মানুষের জন্য পুলিশের সতর্কবার্তা
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সাধারণ মানুষের উদ্দেশে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা দিয়েছে—
- অজানা লিঙ্কে ক্লিক করবেন না – সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া যে কোনও লিঙ্ক যাচাই না করে ক্লিক করবেন না।
- অচেনা নম্বর বা ইমেলের মাধ্যমে আসা চাকরির অফারে বিশ্বাস করবেন না – কোনও বিশ্বস্ত সূত্র ছাড়া অনলাইন চাকরির অফার গ্রহণ করা উচিত নয়।
- পেমেন্ট করার আগে যাচাই করুন – কোনও সংস্থার হয়ে কাজ করার আগে তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ও রেজিস্ট্রেশন যাচাই করুন।
- সন্দেহজনক কার্যকলাপ দেখলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানান – প্রতারকদের শনাক্ত করতে দেরি করলে তদন্ত জটিল হয়ে যায়।
সোনারপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, তারা ঘটনার তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে। তবে এ ধরনের প্রতারণা আটকাতে জনগণকেই আরও বেশি সচেতন হতে হবে।