
কুলতলিঃ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা পুলিশের প্রধান কাজ। কিন্তু তার বাইরেও মানবিক দায়িত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর পুলিশ জেলার কুলতলি থানার পুলিশ কর্মীরা। শুধু মানুষের সুরক্ষা নয়, এবার প্রকৃতি ও প্রাণীদের প্রতিও তাঁরা বাড়িয়ে দিয়েছেন সহানুভূতির হাত। সুন্দরবনের অদূরে অবস্থিত এই থানার চারপাশে রয়েছে অসংখ্য গাছ। এই গাছগুলিকে ঘিরেই শুরু হয়েছে এক সুন্দর উদ্যোগ। গাছের ডালে ডালে বাসা বেঁধেছে অসংখ্য পাখি। আর এই উড়ন্ত অতিথিদের যত্ন নিতে থানার পুলিশকর্মীরা হয়েছেন প্রকৃত বন্ধু।
আরও পড়ুনঃ রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে জলাভূমি ভরাট রুখল পৌরসভা
কুলতলি থানার আইসি ফারুক রহমান বরাবরই পরিচিত পশুপ্রেমী হিসেবে। এই প্রচণ্ড গরমে যাতে পাখিরা কষ্ট না পায়, তাই থানার চত্বরে থাকা গাছগুলিতে খাবার ও পানীয়র ব্যবস্থা করেন তিনিই। গাছের ডালে বাঁধা হয় খাবার ও জলের পাত্র। প্রথমদিকে এটি ছিল একক উদ্যোগ, কিন্তু ধীরে ধীরে থানার অন্যান্য পুলিশ কর্মীরাও এতে সামিল হন। এখন নিয়মিতভাবে থানার চত্বরের গাছগুলিতে রাখা হচ্ছে খাবার ও জল। পাখিরাও যেন এই ভালোবাসার প্রতিদান দিতে কার্পণ্য করছে না। থানার চারপাশ এখন মুখরিত পাখির কলকাকলিতে। কুলতলি থানা মোড়ে এলেই এখন শোনা যায় নানান প্রজাতির পাখির মিষ্টি ডাক। স্থানীয় বাসিন্দারাও বেশ খুশি এই উদ্যোগে। সাধারণত থানার পরিবেশ নিয়ে অনেকের মনে একরকম ভয় কাজ করে, কিন্তু কুলতলি থানায় ঢুকলেই এখন পাওয়া যায় এক অন্যরকম অনুভূতি—একটি সবুজ ও প্রাণবন্ত পরিবেশ।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, “আমরা আগে ভাবতেও পারিনি যে থানার মতো জায়গায় এমন সুন্দর উদ্যোগ নেওয়া হবে। এটি শুধু পাখিদের জন্য ভালো হয়নি, আমাদের মনও ভালো হয়ে যায় এখানে এসে।” পুলিশের কাজ শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষা নয়, মানবিকতার পরিচয় দেওয়াও সমান গুরুত্বপূর্ণ। কুলতলি থানার পুলিশ কর্মীরা সেটাই করে দেখিয়েছেন। জীবসেবার এই ছোট প্রচেষ্টাই বড় দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে সকলের কাছে। এই উদ্যোগ প্রমাণ করে, শুধু মানুষের জন্য নয়, প্রকৃতির প্রতিও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন। যদি সবাই এগিয়ে আসে, তবে পৃথিবী হয়ে উঠবে আরও সুন্দর, আরও মানবিক। কুলতলি থানার পুলিশ দেখিয়ে দিলেন, খাকি পোশাকের মধ্যেও রয়েছে এক কোমল হৃদয়।